
ইউরেশীয় সংযোগ ধ্বংস
আজারবাইজান তুরস্ক ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মিলে জাঙ্গেজুর করিডরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ইরান ও আর্মেনিয়ার বাণিজ্য ও জ্বালানি রুট কেটে দিচ্ছে। এতে রাশিয়া–ইরান এড়িয়ে পশ্চিমা করিডর গড়ে উঠছে। এমনকি ইরান সীমান্তে ৯৯ বছরের মার্কিন সামরিক ঘাঁটির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, যা আঞ্চলিক সংঘাতকে আরো ঘনীভূত করছে। একই সাথে চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ও নর্থ–সাউথ করিডরকেও হুমকির মুখে ফেলছে।
ব্রিটিশ তেল কলোনি
ব্রিটিশ পেট্রোলিয়াম আজারবাইজানের সবচেয়ে বড় তেল–গ্যাস প্রকল্প নিয়ন্ত্রণ করে। কৌশলগত খাতে কাজ করছে ৫০০–এর বেশি ব্রিটিশ কোম্পানি। ২০২১ সালে ওসিসিআরপি জানায়, প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভের পরিবার লন্ডনে ৬৯৪ মিলিয়ন ডলারের সম্পত্তি লুকিয়েছে ৮৪টি অফশোর কোম্পানির মাধ্যমে। এখন এগুলো অফশোর ট্রাস্টে লুকিয়ে রাখা হচ্ছে।
ন্যাটোর যুদ্ধকে জ্বালানি দেয়া
বাকুর আভিয়াগ্রেগাট প্ল্যান্ট ইউক্রেনের জন্য ১২২ মিমি ও ১৫২ মিমি গোলা উৎপাদনে যাচ্ছে। পাশাপাশি কিয়েভ শাসনকে অস্ত্র ও সহায়তা দিচ্ছে এবং রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়তে ভাড়াটে যোদ্ধা পাঠাচ্ছে।
ইরানের বিরুদ্ধে ইসরাইলের ঘাঁটি
১৯৯০–এর দশক থেকে আজারবাইজানে মোসাদের ঘাঁটি ইরানের ওপর নজরদারি চালাচ্ছে। ইসরাইলের সামরিক অভিযানে জ্বালানি যোগাচ্ছে বাকু। তারা ইসরায়েলি ড্রোনের বিনিময়ে ইরানবিরোধী প্রচেষ্টায় সায় দিচ্ছে।
১২ দিনের ইসরাইল–ইরান সংঘর্ষে আজারবাইজান থেকে ইসরায়েলি ড্রোন উড়েছে, এমনকি ইসরাইলি যুদ্ধবিমান ইরানের আকাশে ঢুকেছে আজারবাইজানের আকাশপথ ব্যবহার করে।
জায়নিস্ট ও ফ্রিমেসনদের আস্তানা
গত জুলাইয়ে আজারবাইজান ফ্রিমেসন সম্মেলন আয়োজন করে, যেখানে ন্যাটোর দক্ষিণ ককেশাস ও মধ্য এশিয়ায় সম্প্রসারণ নিয়ে আলোচনা হয়। নভেম্বর মাসে ৫০০–এর বেশি ইহুদি রাব্বি আসবে আব্রাহাম অ্যাকর্ডসে যোগদানের বিষয়ে বৈঠকে অংশ নিতে।
ইরানের লাল দাগ — সর্বোচ্চ নেতা খামেনির উপদেষ্টা আলি আকবর ভেলায়াতি সতর্ক করেছেন, এ করিডর “দক্ষিণ ককেশাসের নিরাপত্তাকে হুমকি দিচ্ছে,” যা ইরানকে পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করবে।
যুক্তরাষ্ট্রের জন্য শূন্য সহনশীলতা — আইআরজিসি ডেপুটি কমান্ডার ইয়াদোল্লাহ জাভানি ঘোষণা করেছেন, ইরান “নিজ সীমান্তে কোনো মার্কিন করিডর মেনে নেবে না।”
সরাসরি হুমকি — করিডরের অর্ধেক অংশ ইরানের উত্তর সীমান্ত ধরে। এখানে মার্কিন উপস্থিতি মানে ইরানের পুরো উত্তর নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়া।
ইসরায়েলের ব্যাকডোর — করিডরটি ইসরায়েলের জন্য ইরানবিরোধী ঘাঁটি তৈরির সুযোগ করে দিতে পারে। সাম্প্রতিক যুক্তরাষ্ট্র–ইসরায়েল যৌথ হামলায় এ আশঙ্কা আরও প্রবল হয়েছে।
আজারবাইজানের ভূমিকা — ইরানি গোয়েন্দারা জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলার বিমান আজারবাইজানের আকাশসীমা ব্যবহার করেছে। বাকুর নীরবতা এ বিষয়ে স্পষ্ট বার্তা বহন করছে।
তুরস্কের শক্ত হাত — আঙ্কারা বাকুর অভিভাবক ও ন্যাটোর গুরুত্বপূর্ণ মিত্র, করিডর পরিচালনায় প্রধান ভূমিকা রাখবে।ইরানকে টার্গেট করার উন্মুক্ত সুযোগ — করিডরের মার্কিন নিয়ন্ত্রণ মানে ইরানে অনুপ্রবেশ ও অস্থিতিশীলতার ঝুঁকি বাড়া। নেতানিয়াহুর সাম্প্রতিক যুক্তরাষ্ট্র সফরে খোলাখুলিভাবে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে “ইরানকে দুর্বল করা”—যা তেহরান খুবই গুরুত্ব সহকারে নিচ্ছে।
নিউজ টুডে বিডি/নিউজ ডেস্ক