
চাল, তেল, চিনিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় অনেক পণ্যের দাম বেড়েছে বাজারে। এবার সরবরাহের সংকটের অজুহাতে সব ধরনের ডালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে মুগ ডালের দাম। এক মাসের ব্যবধানে পণ্যটির দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ৪০ টাকা। আর মসুর ডালের দাম বেড়েছে ২০ টাকা পর্যন্ত।
পুরান ঢাকার মৌলভীবাজারে এক মাস আগেও প্রতি কেজি মোটা দানার মসুর ডাল ৮৮-৯০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বর্তমানে তা ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি মানের মসুর ডালের দাম এক মাস আগে ছিল ১২০-১২৩ টাকা, এখন তা ১২৮-১২৯ টাকা। আর মুগ ডালের দাম ছিল ৯০-১০২ টাকা, বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ১৩০-১৪০ টাকায়।
দেশে ডালের চাহিদা বছরে প্রায় ২৬ লাখ টন। এর মধ্যে ৯ লাখ টনের কাছাকাছি দেশে উৎপাদিত হয়। বাকি ডাল ভারত, কানাডা, অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করতে হয়। ডাল ব্যবসার সিংহভাগই নিয়ন্ত্রণ করে বড় করপোরেট কোম্পানিগুলো। আন্তর্জাতিক বাজার থেকে ডালের গোটা আমদানি করে নিজস্ব মিলে ভেঙে তারা যে দামে বিক্রি করে, সে অনুযায়ীই বাজারদর নির্ধারিত হয়।
আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, ডলারের মূল্যবৃদ্ধি ও সংকট থাকায় ডাল আমদানি কম হচ্ছে। আমদানি কম হলেও দুই মাস ধরে ডালের বাজার স্থিতিশীল আছে বলে দাবি তাদের।
ভোগ্যপণ্যের অন্যতম বড় আমদানিকারক ও বিএসএম গ্রুপের কর্ণধার আবুল বশর চৌধুরী বলেন, গত দুই মাস ধরে মসুর ডালের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। মসুর ডালের গোটা একমাত্র অস্ট্রেলিয়া থেকে আমদানি হয়ে থাকে। বর্তমানে তাদের বাজারে প্রতি মণ মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে প্রতি মণ (৩৭ কেজি ৩২০ গ্রাম) ৩ হাজার ৩০০ থেকে ৩ হাজার ৩২০ টাকায়। এ হিসাবে প্রতি কেজির দাম পড়ে ৮৮ টাকা ৪২ পয়সা থেকে ৮৮ টাকা ৯৬ পয়সায়।
আমদানিকারকেরা ডালের বাজার স্থিতিশীল দাবি করলেও পাইকারি ও খুচরা বাজারের চিত্র ওই দাবির ঠিক উল্টো। দেশের ডালের অন্যতম বড় বাজার নারায়ণগঞ্জের নিতাইগঞ্জ। সেখানকার ডাল ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, এক মাস আগেও যে মুগ ডাল ৮০-৮৫ টাকায় বিক্রি হতো এখন তার দাম ১২০ টাকা। একইভাবে ১০৪ টাকার মুগ ডাল এখন ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর ৫২ টাকার অ্যাংকর ডাল ৬০-৬২ টাকা, ৯০ টাকার বোল্ডার মসুর ডাল ১০০-১০১ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
স্বপ্ন সুপারশপে গতকাল প্রতি কেজি মোটা দানার খোলা মসুর ডাল ১৩০ টাকা, সরু দানার মসুর ডাল ১৫৫ টাকা, মুগ ডাল ১৪০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। তবে এখানে প্যাকেটজাত ডালের দাম খোলার চেয়ে একটু বেশি।