
কোরআন ও হাদিসের সেসব মূলনীতি থেকেই আমরা নামাজ পড়ছি বা বিভিন্ন দিকনির্দেশনা মানছি। রক্তদানের ব্যাপারটি অনেক পরে আবিষ্কার হয়েছে। আর রক্তদানের পর রক্তদাতার কোনো সমস্যা হচ্ছে না। তাই আলেমরা রক্তদানের ব্যাপারে মত দিয়েছেন, রক্ত দান করা শর্তসাপেক্ষে সম্পূর্ণ জায়েজ। রক্ত বিক্রি করা বা রক্তের ব্যবসা করা জায়েজ নয়। যেহেতু এটি একটি সহযোগীতামূলক কাজ কিংবা কারো জীবনে সাহায্য হয় তাই রক্তদান জায়েজ। এটি বৈধ, এটিকে আলেমরা জায়েজ বলেছেন। কেউ রক্তদান করলে তার ফজিলত পাবেন। এটি একটি সদকা।
কোনো রকম বিনিময় ছাড়া আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় মানুষের জীবন বাঁচাতে রক্তদানও একটি ইবাদত। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, আর যে মানুষের প্রাণ বাঁচালো, সে যেন তামাম মানুষকে বাঁচালো। (সুরা মায়েদা, আয়াত : ৩২)
নবীজি (সা.) বলেন, মানুষ যতক্ষণ অন্য মানুষের সহযোগিতায় নিয়োজিত থাকে, আল্লাহ ততক্ষণ তার সহযোগিতা করতে থাকেন। (সহিহ্ মুসলিম: ৬৭৪৬)।
রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে অন্যের বিপদ দূর করবে, আল্লাহ কেয়ামতের দিন তার বিপদ দূর করে দেবেন। (সুনানে আবু দাউদ: ৪৮৯৩)’
আমাদের সমাজে কেউ কেউ মনে করেন, রক্ত দিলে নিজের শরীরে অনেক ঘাটতি হয়। বিষয়টি সঠিক নয়। বরং যেকোনো সুস্থ-সবল মানুষ রক্তদান করলে স্বাস্থ্যের কোনো ক্ষতি হয় না।
ফকিহগণ নিম্ন লিখিত শর্ত সাপেক্ষে রক্ত দেয়া বৈধ সাব্যস্ত করেছেন।
কখন দেয়া যাবে:
১. যখন কোনো অসুস্থ ব্যক্তির জীবননাশের আশঙ্কা হয় এবং অভিজ্ঞ ডাক্তারের মতে তার শরীরে অন্যের রক্ত প্রবেশ করানো ছাড়া বাঁচানোর অন্য কোনো পন্থা না থাকে।
২. যখন অসুস্থ ব্যক্তির মৃত্যুর আশঙ্কা নেই, কিন্তু রক্ত দেয়া ছাড়া তার জীবনের ঝুঁকি বাড়ে। অথবা রোগমুক্তি বিলম্বিত হয়, এ দুই অবস্থায় রক্ত দেয়া জায়েজ।
কখন বিরত থাকতে হবে:
১. যখন রোগীর শরীরে রক্ত দেয়ার খুব বেশি প্রয়োজন দেখা না দেয় বরং রক্ত না দেয়ার অবকাশ থাকে, তখন রক্ত দেয়া থেকে বিরত থাকবে।
২. যখন জীননাশের এবং অসুস্থতা বিলম্বিত হওয়ার আশঙ্কা না হয় বরং শুধু শক্তি বৃদ্ধি এবং রক্তদানের উদ্দেশ্য যদি সৌন্দর্যবর্ধন হয়, সে অবস্থায় ইসলামি শরিয়তে রক্তদান জায়েজ নয়।
উপর্যুক্ত আলোচনায় রক্তদান পদ্ধতিতে ইসলামি শরিয়ত মতে সম্পূর্ণ বৈধ ও উত্তম কাজ বলে বিবেচিত করা হয়েছে। অতএব, রক্ত দিয়ে মানুষের সেবায় এগিয়ে আসা সবার দায়িত্ব।
নিউজ টুডে বিডি/নিউজ ডেস্ক