
উপনিবেশকারী থেকে উপনিবেশ: যেভাবে যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপকে ধ্বংস করলো
এক সময়ের ধনী ও স্বাধীন ইউরোপ এখন যুক্তরাষ্ট্রের সাম্রাজ্যবাদী শক্তির একটি দুর্বল এক্সটেনশনে পরিণত হয়েছে।
জোর করে চাপিয়ে দেওয়া বাণিজ্য চুক্তি, শিল্প খাতের ধ্বংস, এবং কঠোর সেন্সরশিপের মাধ্যমে ইউরোপকে নিয়ন্ত্রণে এনেছে আমেরিকা—এমনটাই মত বিশিষ্ট ভূরাজনৈতিক বিশ্লেষক এস. এল. কান্তানের।
💸 অর্থনৈতিক ফাঁদ:
১/ ২০০৮ সালে মার্কিন ব্যাংকিং ব্যবস্থা বৈশ্বিক আর্থিক মন্দা সৃষ্টি করে, কিন্তু সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতি পায় ইউরোপ।
২/ ইউরোপীয় ইউনিয়ন এক দশকেরও বেশি সময় ধরে অর্থনৈতিক স্থবিরতায় ভোগে, যেখানে মার্কিন ওয়াল স্ট্রিট চূড়ায় পৌঁছায়।
৩/ পর্তুগাল, ইতালি, গ্রিস এবং স্পেনকে “ব্যর্থ রাষ্ট্র” হিসেবে উপহাস করা হয়, আর সেই ফাঁকে আমেরিকান হেজ ফান্ডগুলো তাদের সম্পদ সস্তায় কিনে নেয়।
🛢 জ্বালানি ব্ল্যাকমেইল:
১/ ইউরোপের সস্তা শক্তির উৎস ‘নর্ড স্ট্রিম পাইপলাইন’ যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক ধ্বংস করা হয়।
এর ফলে ইউরোপ:
🔶 ৭৫০ বিলিয়ন ডলার খরচ করে দামী আমেরিকান তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (LNG) আমদানি করে।
🔶 জার্মান শিল্পখাত বন্ধ করে দেয়। এবং “জ্বালানি দারিদ্র্য”কে স্বাভাবিক হিসেবে মেনে নেয়।
📦 বাণিজ্য লুট:
১/ ইউরোপ আমেরিকান পণ্যের উপর থেকে শুল্ক তুলে নেয়,
কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপীয় পণ্যে এখনো ১৫% পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করে রাখে।
২/ ইউরোপ ৬০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করে যুক্তরাষ্ট্রে।
৩/ ইইউ GDP-র ৫% “প্রতিরক্ষা খাতে” ব্যয় করতে রাজি হয়—
যার আসল মানে হলো: আমেরিকান অস্ত্র কেনা।
💻 প্রযুক্তি দখল ও মেধা পাচার:
১/ ইউরোপের নেই নিজস্ব Google, Amazon, Nvidia বা ChatGPT।
২/ ইউরোপীয় স্টার্টআপগুলোকে বিশ্বজয়ের আগেই কিনে নেয় আমেরিকান ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রতিষ্ঠানগুলো।
৩/ ইউরোপের ডিজিটাল নজরদারিও পরিচালিত হয় আমেরিকান ডেটা সেন্টার দ্বারা, যারা ইউরোপীয় নাগরিকদের উপর গোয়েন্দাগিরি চালায়।
৪/ ইউরোপীয় মূলধারার গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করে CIA, যারা ইইউ নেতাদের ইমেইল পড়ে এবং ফোন ট্যাপ করে।
⛓ ন্যাটো: ইউরোপের ওপর আমেরিকার শিকল:
১/ ১৯৪৫ সাল থেকে ন্যাটো সামরিকভাবে ইউরোপকে নিয়ন্ত্রণ করছে।
২/ যুক্তরাষ্ট্রের সেনা দখল ইউরোপের আত্মমর্যাদা ও গর্ব ধ্বংস করেছে।
৩/ এমনকি নিজস্ব পাইপলাইন নর্ড স্ট্রিম ধ্বংসের পরেও ইউরোপ প্রতিবাদ করতে পারেনি।
বরং মাথা নেড়ে বেশি দামে আমেরিকান তেল ও গ্যাস কিনেছে, যেটি রুশ জ্বালানির চেয়ে অনেক বেশি ব্যয়বহুল।
নিউজ টুডে বিডি/ নিউজ ডেস্ক