
অতীতে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে বিভিন্ন ফেডারেশনের উচ্চপদের কর্মকর্তার পদচারণাই ছিল বেশি। ক্রীড়াক্ষেত্রে বাজেট চাওয়া কিংবা লক্ষ্য অর্জনের ফিরিস্তিটা গল্পের মতো সাজিয়ে বলতেন তারা। সঠিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য যাদের বেশি অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা, সেই টেকনিক্যাল ব্যক্তি তথা কোচরা ছিলেন এই জায়গায় গুরুত্বহীন।
যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী হওয়ার পর নাজমুল হাসান পাপন দেশের ক্রীড়া ফেডারেশনগুলোর ভেতর এবং বাইরের অবস্থা সম্পর্কে জানতে টেকনিক্যাল ব্যক্তিকেই অগ্রাধিকার দিয়েছেন। মঙ্গলবার থেকে একে একে বিভিন্ন ফেডারেশনের সঙ্গে বসবেন তিনি। এরই মধ্যে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় থেকে ফেডারেশনগুলোর কাছে চিঠিও চলে গেছে। সেখানে আমন্ত্রণপত্রে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে দু’জন ব্যক্তিকে আলাদা গুরুত্ব দিয়েছেন পাপন। ফেডারেশনের দুই কর্মকর্তার সঙ্গে একজন বাজেট-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও একজন টেকনিক্যাল ব্যক্তিকে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে চিঠিতে।
অলিম্পিক, কমনওয়েলথ এবং এশিয়ান গেমসের মতো বড় আসরে ব্যক্তিগত খেলাগুলোর দিকেই বেশি চোখ থাকে। তাই তো প্রথম দিন সম্ভাবনাময় ইভেন্ট সাঁতার, অ্যাথলেটিকস, শুটিং, টেবিল টেনিস, আরচারির মতো ফেডারেশনের কর্তাদের ডেকেছেন। চিঠি পাওয়া ১০টি ফেডারেশন নিজেদের সমস্যা এবং চাওয়াগুলো চিহ্নিত করে একটা প্রস্তাবনা তৈরি করেছেন।
দেশের সম্ভাবনাময় ইভেন্টের মধ্যে অন্যতম সাঁতারের অবস্থা খুবই বেহাল। প্রত্যাশা অনুযায়ী ফল আসছে না। কেন হচ্ছে না, কী কারণে হচ্ছে না– সেগুলো নিয়ে মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করবেন বাংলাদেশ সুইমিং ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এমবি সাইফ, ‘এখন আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার অর্ধেকের বেশি ২৫ মিটার পুলে হয়। কিন্তু আমাদের একটাও ২৫ মিটার পুল নেই। জাতীয় সুইমিং কমপ্লেক্স ১৯৯২ সালের পর আর সংস্কার হয়নি। ভালো করার জন্য যেসব জিনিস আমাদের দরকার, তার মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি প্রশিক্ষণ। আমাদের গ্যাসের লাইন কাটা, যে কারণে আমরা ইচ্ছা করলেও এখানে লং টাইম ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করতে পারছি না। এর সঙ্গে আমরা একটা ভিশন মন্ত্রীর কাছে তুলে ধরব।’
নতুন মন্ত্রীর সঙ্গে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়েই কথা বলতে চান বাংলাদেশ টেবিল টেনিস ফেডারেশনের সহসভাপতি খন্দকার হাসান মুনির, ‘খুবই ভালো লেগেছে, আমন্ত্রণপত্রে দু’জনকে চেয়েছেন মাননীয় মন্ত্রী; একজন হচ্ছেন বাজেট-সংক্রান্ত ব্যক্তি, আরেকজন হচ্ছেন টেকনিক্যাল ব্যক্তি তথা কোচ। এর অর্থই হচ্ছে যখন কোনো ফেডারেশন কিছু চাইবে, আসলে তারা কী করতে পারে বা ওই জায়গায় যেতে পারবে কিনা, সেটা কিন্তু টেকনিক্যাল ব্যক্তিই বোঝাতে পারবেন।’
টেবিল টেনিসের বড় সমস্যা কোচ। চারজন বিদেশি কোচের অর্থটা মন্ত্রীর কাছে চাইবেন বলে জানান হাসান মুনির, ‘টেবিল টেনিসে আমার একটাই চাওয়া পরিপূর্ণ কোচিং স্টাফ। একজন সিনিয়র, একজন জুনিয়র কোচ এবং দু’জন প্র্যাকটিস পার্টনার। এদের বেতনটা আমরা চাইব।’