
জার্মান চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্সের সাথে এবি পার্টির সৌজন্য সাক্ষাৎঃ রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও গুণীজনদের হয়রানিতে উদ্বেগ
আমার বাংলাদেশ পার্টি ‘এবি পার্টি’র একটি প্রতিনিধিদল আজ ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ রবিবার বিকেল তিনটায় বাংলাদেশে নিযুক্ত জার্মান চার্জ ডি’এফেয়ার্স (এ আই) ইয়ান-রল্ফ ইয়ানোভস্কি’র সঙ্গে এক সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হন। রাজধানীর গুলশানস্থ জার্মান দূতাবাসে এই সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়।
এবি পার্টির প্রতিনিধিদলে ছিলেন দলের যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ ও সহকারী সদস্য সচিব এবং উইমেন উইং ইনচার্জ ব্যারিস্টার নাসরীন সুলতানা মিলি। আলোচনাকালে জার্মান রাষ্ট্রদূতের সাথে উপস্থিত ছিলেন দূতাবাসের রাজনৈতিক, প্রেস ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক অ্যাটাশে জিলকে শ্মীর।
এবি পার্টি নেতৃবৃন্দ তাদের দল গঠনের প্রেক্ষাপট, দলের নীতি-কর্মসূচি ও দলটি গত চার বছরে যে প্রতিকূলতা ও চ্যালেঞ্জ পাড়ি দিয়ে অগ্রসর হয়েছে তা তুলে ধরে কথোপকথন শুরু করেন। এবি পার্টিকে ‘দ্বিতীয় প্রজন্মের’ রাজনৈতিক দল হিসেবে অভিহিত করে দলের যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, দীর্ঘকাল ধরে জনগণ বিশেষ করে যুবকরা, পুরোনো ধারার অগণতান্ত্রিক-রাজবংশীয় রাজনীতি দেখে হতাশ ও ক্লান্ত। প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতার কারণে তরুণ ও যুবকরা পরিবর্তনশীল বিশ্ব ও মানসিকতার সাথে পাল্লা দিয়ে চলতে চায়। জার্মান দেশে চলমান রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিরসনে করণীয় বিষয়ে নেতৃবৃন্দের মূল্যায়ন জানতে চান। এবি পার্টি নেতৃবৃন্দ বলেন, ১৯৯৬ সালে রাজনৈতিক দলগুলোর পারস্পরিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি অন্তর্ভুক্ত করা হলেও ২০১১ সালে একতরফা পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তা অন্যায্যভাবে বাতিল করে বর্তমান সংকট সৃষ্টি করা হয়েছে। দেশে এ যাবত যে ১১টি জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে তার মধ্যে ৭ টি নির্বাচনই ছিল বিতর্কিত ও প্রশ্নবিদ্ধ। নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হওয়ার কারণে মাত্র ৪ টি নির্বাচন ছিল তুলনামূলকভাবে অবাধ, সুষ্ঠু এবং বিশ্বাসযোগ্য। এই ৪ টি নির্বাচনে প্রতিবারই ক্ষমতাসীনরা পুনরায় নির্বাচিত হতে ব্যর্থ হয়েছিল।
জার্মান চার্জ ডি’অ্যাফেয়ার্সের (এ আই) সাথে আলাপকালে দেশের গুনীজন ও বিশিষ্ট নাগরিকদের মধ্যে নোবেল বিজয়ী ডক্টর ইউনুস, মানবাধিকার সংস্থা ‘অধিকার’-এর সম্পাদক আদিলুর রহমান খান শুভ্র সহ মানবাধিকার সংগঠন ও কর্মীদের কার্যক্রমে বাঁধা সৃষ্টি ও বিচারিক হয়রানির বিষয়টি প্রাধান্য পায়।
এবি পার্টি নেতৃবৃন্দ ফেডারেল রিপাবলিক অফ জার্মানির পক্ষ থেকে স্বাধীনতার অব্যবহিত পর ১৯৭২ সালে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য বিশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। পাশাপাশি আমদানী-রপ্তানি বাণিজ্য, বিভিন্ন প্রযুক্তিগত উন্নয়নে সহযোগিতা, দ্বিপাক্ষিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এবং জার্মানীতে বিপুল সংখ্যক মেধাবী ছাত্রদের বৃত্তি দিয়ে শিক্ষা সমৃদ্ধিতে অবদান রাখার ভূয়সী প্রশংসা করেন। তারা বাংলাদেশ-জার্মান ঐতিহাসিক অংশীদারিত্বকে আরও শক্তিশালী করতে জার্মান চার্জে ডি’অ্যাফেয়ার্স (এ আই) কে স্কলারশিপ এর আওতায় আরও বেশি বাংলাদেশী ছাত্রদের অন্তর্ভূক্ত করার অনুরোধ জানান। জার্মান চার্জে ডি’অ্যাফেয়ার্স (এ আই) এবি পার্টি নেতৃবৃন্দকে ধন্যবাদ জানান সমস্যা সমাধান ভিত্তিক নতুন প্রজন্মের রাজনৈতিক উদ্যোগের জন্য এবং সহসা একটি গ্রহণযোগ্য, অংশগ্রহণমূলক, শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের ব্যপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।