
দেশের রাজনীতিতে চলছে অস্থিরতা। বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানোর দাবির আন্দোলন জাতীয় রাজনীতিতে বিরূপ পরিস্থিতি তৈরি করেছে। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ইউনূসের পদত্যাগের আভাস অনেক সমীকরণ নতুন করে ভাবতে বাধ্য করছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের নেতাদের অন্যতম দাবি জুলাই সনদ কিংবা জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশ এবং অভ্যুত্থানের চেতনা অনুযায়ী দেশ পুনর্গঠনও হুমকির মুখে পড়েছে। তবে অভ্যুত্থান থেকে সংগঠিত রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) জুলাই স্পিরিট ও ঘোষণাপত্রের সঙ্গে কোনো প্রকার ছাড় দিতে রাজি নয়।
এনসিপির নেতারা বলছেন, জুলাই অভ্যুত্থানকে বেহাত করতে একটি পক্ষ খুবই সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। বিশেষ করে সরকারের জুলাই সনদ ঘোষণার পরিকল্পনা ভেস্তে দিতে দেশি ও বিদেশি চক্র কাজ করছে। উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করে অবশ্যই প্রকাশ করতে হবে। অভ্যুত্থানের অন্যতম স্বীকৃতি এই ঘোষণাপত্র। এনসিপি এর সঙ্গে কোনো ধরনের কম্প্রোমাইজ করবে না। প্রয়োজনে বৃহত্তর ঐক্য নিয়ে ফের আন্দোলনে নামবে দলটি।
এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্র বাস্তবায়নে যত বড় বাধাই আসুক, তা মোকাবিলা করা হবে। কারণ আমাদের রাজনীতি ও অস্তিত্ব হচ্ছে এই জুলাই গণঅভ্যুত্থান। তা যত বেশি ধারণ করব, আমরা তত বেশি এগিয়ে যেতে পারব। দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা চলছে। এর ফাঁদে পা না দিয়ে আমরা বরং ঐক্যবদ্ধ থাকব।
গতকাল শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, আমরা মনে করি, জুলাই ঘোষণাপত্রের যে নির্ধারিত সময় দেওয়া হয়েছিল, সময় কিন্তু এগোচ্ছে। ফলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রদানের ব্যবস্থা করা উচিত। বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ একসঙ্গে প্রকাশ করা উচিত। তাহলে জনমনে এবং রাজনৈতিক দলগুলোর স্বস্তি ও আস্থার জায়গা তৈরি হবে। ফলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জুলাই ঘোষণাপত্র, বিচার, সংস্কার এবং নির্বাচনের রোডম্যাপ একসঙ্গে ঘোষণা করা।
রাজনীতির টালমাটাল পরিস্থিতি তৈরি হয় ইশরাক হোসেনের শপথ গ্রহণকে কেন্দ্র করে। বিএনপি দলগতভাবে এ দাবির পক্ষে থাকলেও এনসিপি নেতারা বলছেন ভিন্ন কথা। তারা সরাসরি স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন। জাতীয় নির্বাচনের আগে এ নির্বাচনই সমস্যার সমাধান বলে মনে করছেন তারা।