
রেলের রানিং স্টাফরা তাদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নেওয়ায় সারা দেশে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। তবে শিডিউল বিপর্যয়ের কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।
বুধবার (২৯ জানুয়ারি) সকাল থেকে দূরপাল্লার সঙ্গে কমিউটার ট্রেনের টিকিট বিক্রি দেখা যায় রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে। পাশাপাশি রাজশাহীগামী ধুমকেতু এক্সপ্রেসের যাত্রার মাধ্যমে ট্রেন চলাচল শুরু হলেও শিডিউল বিপর্যয়ে পড়ে অন্যান্য ট্রেনগুলো।
জানা গেছে, সকাল ৭টায় নির্ধারিত থাকলেও প্রায় এক ঘণ্টা দেড়িতে চট্টগ্রামের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে সোনার বাংলা এক্সপ্রেস। অন্যদিকে আড়াই ঘণ্টা পর যাত্রা করে কক্সবাজারগামী পর্যটক এক্সপ্রেস।
যাত্রীদের অভিযোগ- একদিকে নির্দিষ্ট সময়ে ট্রেন ছাড়ছে না, অন্যদিকে কখন ছেড়ে যাবে সে বিষয়েও কোনো তথ্য তারা জানতে পারছেন না। ধর্মঘটের পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হলেও শিডিউল বিপর্যয়ে অনেক ভোগান্তি হচ্ছে। ট্রেনের মতো গণপরিবহন চলাচল বন্ধ হওয়ার আগেই সংশ্লিষ্টদের সমস্যা সমাধানে গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানান তারা।
কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন জানান, ইঞ্জিনজনিত কারণে দু’একটি ছাড়া সব ট্রেনই ছেড়ে যাচ্ছে। কোথাও কোনো গোলযোগের খবর নেই। তবে শিডিউল বিপর্যয়ের কারণে সকাল থেকে এ পর্যন্ত সাতটি ট্রেন ছেড়ে গেছে।
কমলাপুর স্টেশনের ম্যানেজার শাহদাত হোসেন বলেন, ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। পাশাপাশি সময়ের সঙ্গে যাত্রী উপস্থিতিও বাড়ছে। তবে কারিগরি কারণে এক ঘণ্টা করে বিলম্বে ছাড়ছে ট্রেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে দু’একদিন সময় লাগতে পারে।
এর আগে, গত সোমবার মধ্যরাত থেকে কর্মবিরতিতে যান রেলের রানিং স্টাফরা। এর ফলে সারা দেশের রেল যোগাযোগে দেখা দেয় অচলাবস্থা। মঙ্গলবার দিনভর চরম ভোগান্তিতে পড়েন ট্রেনের যাত্রীরা।
দিনভর শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে সরকারের উপদেষ্টাদের সঙ্গে শ্রমিক নেতাদের দফায় দফায় বৈঠক হয়। পরবর্তীতে মঙ্গলবার মধ্যরাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি হাসনাত আব্দুল্লাহ ও বিএনপির প্রতিনিধি শিমুল বিশ্বাসের মধ্যস্থতায় রেল উপদেষ্টার বাসায় আবারও শুরু হয় বৈঠক। বৈঠকে শ্রমিক নেতারাও উপস্থিত ছিলেন। রাত আড়াইটার দিকে রেল উপদেষ্টা শ্রমিকদের কয়েকটি দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন।
রেলপথ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান জানান, রেলওয়ের রানিং স্টাফদের সুবিধার বিষয়ে কথা হয়েছে। এই বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয় কিছু সুবিধার বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছে। তবে এরপরও রেলওয়ের রানিং স্টাফদের আরও কিছু দাবি রয়েছে। বিশেষ করে মাইলেজের সুবিধা এক মাসের বেশি হতে পারবে না।
রেল উপদেষ্টার এমন আশ্বাসে রাত থেকেই রেলের রানিং স্টাফদের কর্মবিরতি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন শ্রমিক নেতা মুজিবুর রহমান। তিনি বলেন, যাত্রীদের এমন দুর্ভোগ আমরা চাই না। বাধ্য হয়ে কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হয়েছে। স্টাফ ভাইদের বলব, তারা যেন নিজ নিজ দায়িত্বে ফিরে যায়।