1. Home
  2. শিক্ষা
  3. ক্যাম্পাস
  4. ডাকসু নির্বাচনে চলছে প্রচারণা, ভোটকেন্দ্র বাড়ানোর দাবি
ডাকসু নির্বাচনে চলছে প্রচারণা, ভোটকেন্দ্র বাড়ানোর দাবি

ডাকসু নির্বাচনে চলছে প্রচারণা, ভোটকেন্দ্র বাড়ানোর দাবি

0
  • 2 weeks ago,

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু হয়েছে গতকাল মঙ্গলবার থেকে। প্রার্থীরা নিজস্ব প্যানেল বা স্বতন্ত্রভাবে ইশতেহার ও প্রতিশ্রুতি নিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছে যাচ্ছেন। পোস্টার-ব্যানারের পাশাপাশি সরাসরি কুশল বিনিময় করছেন। ইশতেহারে গুরুত্ব পাচ্ছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের দীর্ঘ দিনের দাবিদাওয়া  ও দীর্ঘদিনের দাবি পূরণের অঙ্গীকার। এতে ক্যাম্পাস জুড়ে উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।

গতকাল জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ‘স্মৃতি চিরন্তন’ চত্বরে মুক্তিযুদ্ধে শহিদ হওয়া ছাত্র-শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করে। ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবর জিয়ারতের মাধ্যমে তাদের প্রচারণা শুরু করে। এছাড়া ছাত্রশিবির, বাগছাস, ছাত্র অধিকার পরিষদ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করেছেন।

এদিকে ডাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা রাখা হয়েছে। নির্বাচনের সাত দিন আগ থেকেই হলগুলোতে বহিরাগত কেউ অবস্থান করতে পারবে না বলে জানিয়েছে প্রশাসন। ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রার্থীরা প্রচার চালাতে পারবেন। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত প্রচারের সুযোগ থাকবে।

গতকাল চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা ও ব্যালট নম্বর প্রকাশ করেছে ডাকসু নির্বাচন কমিশন। তালিকা অনুসারে সব মিলিয়ে ২৮টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে যাচ্ছেন ৪৭১ জন প্রার্থী। এর মধ্যে সহসভাপতি (ভিপি) পদে ৪৫ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ১৯ জন এবং সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে ২৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক পদে ১৭ জন, কমনরুম, রিডিংরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক পদে ১১ জন, আন্তর্জাতিক সম্পাদক পদে ১৪ জন, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে ১৯ জন এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে রয়েছেন ১২ জন, গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে ৯ জন, ক্রীড়া সম্পাদক পদে ১৩ জন, ছাত্র পরিবহন সম্পাদক পদে ১২ জন, সমাজসেবা সম্পাদক পদে ১৭ জন, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক পদে ১৫ জন, মানবাধিকার ও আইন বিষয়ক সম্পাদক পদে ১১ জন এবং ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১৫ প্রার্থী। এবার সবচেয়ে বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে সদস্য পদে। ১৩টি কার্যনির্বাহী সদস্য পদে মোট ২১৭ জন প্রার্থী লড়বেন।

ভোটকেন্দ্র বাড়ানোর দাবি :আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরুর সময় ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান বলেন, আমরা প্রতিশ্রুতি নয় বরং পরিবর্তনের রাজনীতিতে বিশ্বাসী। আগামী ডাকসু বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। ডাকসু নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ানোর দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আটটি ভোটকেন্দ্রের মাধ্যমে ৪০ হাজার ভোটারের ভোটগ্রহণ সম্ভব নয়। ভোটকেন্দ্র না বাড়ালে সবাই ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে না।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিনেট ভবনে আচরণবিধি নিয়ে প্রার্থীদের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের সভা শেষে এ বিষয়ে ডাকসু নির্বাচনে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) ভিপি প্রার্থী আব্দুল কাদের বলেন, ‘একটা বুথে এক ঘণ্টায় ১২ জন ভোট দিতে পারবেন। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ব্যালট পেপার হবে পাঁচ পাতার। আমরা মনে করি, এক জনের ভোট দিতে সময় লাগবে পাঁচ মিনিটের বেশি। এ অবস্থায় সর্বোচ্চ ১৫ থেকে ২০ হাজার ভোট কাস্ট হবে।’

ডাকসু নির্বাচনের প্রচারণা শুরু হওয়ার প্রথম দিনেই শিবির সমর্থিত প্যানেলের ফেস্টুন ফেলে দেওয়ার অভিযোগ এসেছে। গতকাল দুপুরে চারুকলা অনুষদ এলাকায় এই ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার বিষয়ে চারুকলা অনুষদের সহকারী প্রক্টর মো. ইসরাফিল বলেন, আমি ঘটনাস্থলে এসেছি। কারা এ কাজ করেছে, শনাক্তের চেষ্টা করছি।

‘স্ট্রাইকিং ফোর্স’ হিসেবে থাকবে সেনাবাহিনী :ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের সময় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সেনাবাহিনী মোতায়েনসহ তিন স্তরের নিরাপত্তা থাকার কথা জানিয়েছেন প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন। এছাড়া নির্বাচনের আগের দিন (৮ সেপ্টেম্বর) ও নির্বাচনের দিন (৯ সেপ্টেম্বর) মেট্রোরেলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশন বন্ধ থাকবে। গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ডাকসু ও হল পর্যায়ের ভিপি, জিএস ও এজিএস প্রার্থীদের সঙ্গে চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তাদের মতবিনিময় সভায় এ কথা জানানো হয়।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)-এর বরাতে রিটার্নিং কর্মকর্তারা জানান, ভোট গ্রহণের দিন আটটি ভোটকেন্দ্রে তিন স্তরের নিরাপত্তা থাকবে। প্রথম স্তরে থাকবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনসিসি সদস্য ও প্রক্টরিয়াল টিম; দ্বিতীয় স্তরে পুলিশ বাহিনী মোতায়েন থাকবে এবং তৃতীয় স্তরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাতটি প্রবেশমুখে সেনাবাহিনী ‘স্ট্রাইকিং ফোর্স’ হিসেবে অবস্থান করবে। সভায় জানানো হয়, নির্বাচনের সাত দিন আগে থেকে আবাসিক হলে কোনো বহিরাগত থাকতে পারবে না। বৈধ শিক্ষার্থী, অনুমোদিত সাংবাদিক ও নির্বাচন পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা ছাড়া অন্য কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। যেসব শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসের বাইরে থাকেন, তাদের ভোটদানের জন্য বিভিন্ন রুটে বাসের অতিরিক্ত ট্রিপের ব্যবস্থা করা হবে।

নিউজ টুডে বিডি/নিউজ ডেস্ক