
সূর্যের দেখা মেলায় শুক্রবার রাজধানীতে শীতের অনুভূতি কিছুটা কম হলেও দেশের উত্তরাঞ্চল কাঁপছে শীতের দাপটে। শুক্রবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য খুব বেশি না থাকায় শীত বেশি অনুভূত হচ্ছে
আবহাওয়া অফিস বলছে, শীত থাকছে আরও কয়েক দিন। শৈত্যপ্রবাহের এলাকা আরও বাড়তে পারে। সেই সঙ্গে পাঁচ বিভাগের দু-এক জায়গায় বৃষ্টি হতে পারে। তবে সূর্যের দেখা মেলায় দিনের তাপমাত্রা বাড়বে। সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে। আর দিনের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এদিকে পঞ্চগড় ছাড়া দেশের আর কোথাও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেই। শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে উত্তরাঞ্চলে বীজতলা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ধানের সবুজ চারার পাতাগুলো হলদে বর্ণ ধারণ করছে। ফলে দুশ্চিন্তায় পড়েছে কৃষক।
কয়েকদিন পর রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সূর্যালোক পূর্ণাঙ্গভাবে দেখেছে মানুষ। ঠান্ডা থাকলেও পাওয়া গেছে নরম রোদের উষ্ণতা। শুক্রবার ভোর ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে কক্সবাজারে। আর এ সময়ে ঢাকায় সর্বনিন্ম ১৫ ডিগ্রি ও সর্বোচ্চ ২৩ দশমিক ১ ডিগ্রি তাপমাত্রা ছিল।
কুড়িগ্রামের উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া লোকজন ঘরের বাইরে বের হচ্ছে না। বৃহস্পতিবার জেলায় তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রির নিচে থাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে জেলা প্রশাসন। শুক্রবার তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠেছে। শীতের এমন পরিস্থিতিতে সব পেশা ও শ্রমজীবী মানুষজন পড়েছেন চরম বিপাকে। একদিকে কাজের অভাব, অন্যদিকে গরম কাপড় কেনার সামর্থ্য না থাকায় খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন অনেকে।
গত ৮-১০ বছরে কুড়িগ্রামে এমন পরিস্থিতি দেখি নাই। শীতের সঙ্গে প্রচুর ঠান্ডা বাতাসের কারণে এ বছর শীতের চিত্রটা ভিন্ন। পাশাপাশি রয়েছে ঘন কুয়াশা।
ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতে কুড়িগ্রামের ব্রহ্মপুত্র নদের পূর্ব তীরবর্তী সীমান্তঘেঁষা রৌমারী-রাজিবপুর উপজেলার জনজীবন বিপর্যস্ত। বেশি দুর্ভোগ পোহাচ্ছে ছিন্নমূল ও নিম্নআয়ের মানুষজন। প্রতিদিন গড়ে ১০-১২ জন করে শিশু-কিশোর নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। কুয়াশার কারণে রাত ৮টার মধ্যে রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে যায়। হাট-বাজারগুলোতে লোকজন না থাকায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ হয়ে যায়। রৌমারী, রাজিবপুর ও চিলমারী উপজেলার প্রায় অর্ধশত চরের পঞ্চাশ হাজার মানুষ গরম কাপড়ের অভাবে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। সরকারের সাহায্য-সহযোগিতা অতি নগণ্য। এ পর্যন্ত কোনো বিত্তবান ব্যক্তি বা বেসরকারি সংস্থা শীতবস্ত্র বিতরণে এগিয়ে আসেনি।