বছরের প্রথম ১০ মাসে ডেঙ্গু রোগী ৭০ হাজার ছাড়িয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ২৭৮ জনের। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত সেপ্টেম্বরে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ১৫ হাজার ৮৬৬ রোগী। অক্টোবরে সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২২ হাজার ৫২০ জনে। অর্থাৎ এক মাসে ডেঙ্গু রোগী বেড়েছে ৪২ শতাংশ। এতে ডেঙ্গু নিয়ে দেশজুড়ে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তন, অনিয়মিত মশা দমন এবং জনসচেতনতার ঘাটতি– এই তিন কারণে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ছে। রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায় মশার বংশবিস্তার রোধে কার্যকর উদ্যোগের ঘাটতি স্পষ্ট।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, গতকাল শনিবার সকাল ৮টার আগের ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৬৫১ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগে (দুটি সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১২০ জন, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটিতে যথাক্রমে ১২০ ও ১১৭, চট্টগ্রামে ৯৮, বরিশালে ১২৯ এবং অন্যান্য বিভাগে ৬৭ জন রয়েছেন। তবে এই সময় নতুন কোনো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি।
জনস্বাস্থ্যবিদ ডা. মুশতাক হোসেন বলছেন, মশা দমন স্থানীয় সরকারের কাজ, চিকিৎসা নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য বিভাগ, আর জনসচেতনতা তৈরিতে সবাইকে যুক্ত হতে হয়। তবে কোথাও সমন্বয় নেই। সবাই রুটিন কাজ করছে। এভাবে চলতে থাকলে ২০ থেকে ৩০ বছরেও ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। তিনি আরও বলেন, নভেম্বর-ডিসেম্বরে থেমে থেমে বৃষ্টি হলে সংক্রমণের ঝুঁকি থাকবে পুরো শীতকাল।
কীটতত্ত্ববিদ অধ্যাপক কবীরুল বাশার বলেন, সাধারণত নভেম্বরের দিকে ডেঙ্গু কমে যায়। তবে এ বছর বিভিন্ন এলাকায় এডিস মশার ঘনত্ব ডেঙ্গু সংক্রমণের উপযুক্ত মাত্রায় আছে। জলবায়ু পরিবর্তন ও অপরিকল্পিত নগরায়ণের কারণে এ বছর ডেঙ্গু মৌসুম দীর্ঘ হচ্ছে। তিনি বলেন, কার্যকর মশা নিয়ন্ত্রণ ছাড়া পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা কঠিন।
চট্টগ্রামে সবচেয়ে ঝুঁকিতে ৫ উপজেলা
: চট্টগ্রামের ১৫ উপজেলার মধ্যে সীতাকুণ্ড, বাঁশখালী, আনোয়ারা, লোহাগাড়া ও কর্ণফুলী এই পাঁচ উপজেলাকে উচ্চঝুঁকির উপজেলা হিসেবে চিহ্নিত করেছে সিভিল সার্জন কার্যালয়। তথ্য অনুযায়ী, শুধু সীতাকুণ্ডেই আক্রান্ত ৬৯৭ জন, বাঁশখালীতে ১৯৩, আনোয়ারায় ১৩০, লোহাগাড়ায় ১১১ এবং কর্ণফুলীতে ১০৪ জন। অক্টোবরে চট্টগ্রামে রেকর্ড ৯৮২ জন আক্রান্ত হয়েছেন, যা চলতি বছরের এক মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। এ পর্যন্ত পুরো জেলায় আক্রান্ত হয়েছেন তিন হাজার ৪৯৭ জন।
চট্টগ্রাম নগরের মানুষের অভিযোগ, মশকনিধন কার্যক্রম নেই বললেই চলে। অনেক জায়গায় মাসের পর মাস ওষুধ ছিটানো হয় না।
নিউজ টুডে বিডি/নিউজ ডেস্ক