1. Home
  2. জাতীয় নির্বাচন
  3. নির্বাচনকে প্রতিহত করার চেষ্টা করলে, মোকাবিলা করবে ইসি
নির্বাচনকে প্রতিহত করার চেষ্টা করলে, মোকাবিলা করবে ইসি

নির্বাচনকে প্রতিহত করার চেষ্টা করলে, মোকাবিলা করবে ইসি

0
  • 1 year ago,

বিএনপি নির্বাচন বর্জনের আহ্বানের বদলে যদি প্রতিহত করতে আসে তাহলে তা মোকাবিলা করার প্রস্তুতি নির্বাচন কমিশনের (ইসি) রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।

শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুরে সিলেট জেলা শিল্পকলা অ্যাকাডেমিতে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, “বিএনপি একটি দল, ওরা নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছে এবং জনগণকে আহ্বান জানাচ্ছে নির্বাচন বর্জন করার জন্য। এটা যদি ওভাবেই বলে, শান্তিপূর্ণভাবে, এটা কিন্তু খুব বড় চ্যালেঞ্জ নয়। কারণ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে, গণতান্ত্রিক অধিকারের মধ্যে কোনো একটা নির্বাচনের পক্ষে যেমন বলা যায়- সে নির্বাচনের সমালোচনাও করা সম্ভব।”

সিইসি বলেন, “এখন তারা (বিএনপি) যদি নির্বাচনকে প্রতিহত করার চেষ্টা করে তাহলে একটা চ্যালেঞ্জ যেটা আসবে সেটা আমাদের মোকাবিলা করতে হবে।”

“আমাদের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বলা হয়েছে, গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে বলা হয়েছে তারা যেন বোঝার চেষ্টা করেন; আসলেই তারা শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন বর্জন করার যে আহ্বান জানাচ্ছেন ওর মধ্যেই যদি সীমাবদ্ধ থাকেন তাহলে আমাদের কোনো সংকট নেই।”

তিনি আরও বলেন, “যদি নির্বাচনের দিন বা আগে বিএনপির অবস্থান পরিবর্তিত হয়ে নির্বাচন প্রতিহত করার কোনো কার্যক্রম গ্রহণ করেন, ভোটারদের যদি ভোটকেন্দ্রে যেতে বাধা প্রদান করা হয়, তাহলে অবশ্যই একটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। তবে সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার প্রস্তুতি আমাদের রয়েছে।”

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, “স্বাভাবিক অবস্থা বজায় রেখে আমরা নির্বাচন পরিচালনার চেষ্টা করব।”

নির্বাচন অবাধ-সুষ্ঠু করার ক্ষেত্রে কেবল দেশীয় নয়, আন্তর্জাতিক দায়বদ্ধতা আছে-এর কারণ ব্যাখ্যা করেন সিইসি।

তিনি বলেন, “কেন বাইরে থেকে বিভিন্ন দেশের লোকরা কথা বলে? এর কারণ হচ্ছে ইউনিভার্সাল ডিক্লারেশন অব হিউম্যান রাইটস জাতিসংঘের সদস্য হওয়ার ক্ষেত্রে মূল নথি। সেখানে গণতান্ত্রিক নির্বাচনের ক্ষেত্রে একটি মানদণ্ড নির্ধারণ করা আছে। এছাড়া আইসিসিপিআরে (ইন্টারন্যাশনাল কোভেন্যান্ট অন সিভিল অ্যান্ড পলিটিক্যাল রাইটস) মানুষের যে ভোট দেওয়ার অধিকার এবং ভোট পাওয়ার অধিকার, নির্বাচিত হওয়ার অধিকার এবং কীভাবে নির্বাচিত হবে, মানদণ্ড কী হবে সুস্পষ্টভাবে বলা আছে। আমরা ওটাতে অনুস্বাক্ষর করেছি।”

তিনি আরও বলেন, “কাজেই আমাদের রাষ্ট্রের প্রতি যেমন দায়বদ্ধতা আছে, ইন্টারন্যাশনাল কমিউনিটির প্রতিও আমাদের দায়বদ্ধতা আছে। ইন্টারন্যাশনাল কমিউনিটির প্রতি আমাদের যে দায়বদ্ধতা, সেটাকে আমরা স্বীকার করি। জনগণের কাছে আমাদের যে দায়ভার, সেটাও আমরা স্বীকার করি।”

আগামী ৭ জানুয়ারি হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট। বিএনপির বর্জনের এই ভোটে ভোটকেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি, সহিংসতামুক্ত ও সুষ্ঠু করার তাগাদা রয়েছে নির্বাচন কমিশন ও সরকারের মধ্যে।

ভোটের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে ১৫ নভেম্বর। ওইদিন ভোটের তফসিল ঘোষণা করে ইসি। সেদিন থেকেই সংসদে যাওয়ার প্রত্যাশায় সরব হয়ে ওঠে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা। তবে ভোটের মাঠে প্রচারণা শুরু হয় গত ১৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে।

বিএনপির না থাকা এই ভোটে ২৭টি দলের ১,৫১৩ জন ও স্বতন্ত্র ৩৮২ জন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রয়েছেন। স্বতন্ত্ররা মূলত ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন পর্যায়ের পদধারী নেতা। জাতীয় পার্টিসহ বেশ কিছু ছোট দল এককভাবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও অনেক আসনে লড়াই হচ্ছে মূলত নৌকার সঙ্গে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্রদের। ফলে শক্তি আর জনসমর্থনের পরীক্ষায় খেই হারাচ্ছেন টানা ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকা দলটির প্রতীক পাওয়া ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।

ইতোমধ্যে প্রায় ৩০টির বেশি আসনে প্রতিপক্ষের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা, প্রচারে বাধা দেওয়া, মারধর, হামলা, সংঘর্ষ, সহিংসতার তথ্য নানা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। এছাড়া পিরোজপুর, মাদারীপুর ও বরিশালে তিনজনের মৃত্যুর খবরও পাওয়া গেছে।

আরও ৬ দিন ভোটের প্রচারণা চালাতে পারবেন প্রার্থীরা। সহিংসতা আরও বাড়তে পারে। তবে সব পক্ষ থেকে সহিংসতা না করার আহ্বান জানানো হয়েছে। নির্বাচন কমিশন ভোটের মাঠের পরিবেশ ঠিক রাখতে তদারকি চালিয়ে যাচ্ছে। নির্বাচনের আচারণবিধি ভঙ্গ করায় বিভিন্ন আসনের নানা প্রার্থীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ, তলব ও জরিমানা করছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।

আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে তিন শতাধিক প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা ইসির শোকজের মুখে পড়েছেন। এদের মধ্যে শতাধিক হলেন নৌকার প্রার্থী। প্রায় সমান সংখ্যক রয়েছেন প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থক। কোনো কোনো প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা একাধিকবার শোকজের মুখোমুখি হয়েছেন। প্রার্থিতা বাতিল হওয়া বা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোদের মধ্যেও কেউ কেউ ইসির শোকজ পেয়েছেন।