
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির কর্মসূচিতে পদবঞ্চিতদের হামলার ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (৩০ আগস্ট) বিকালে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির কালো পতাকা মিছিলে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
এ সময় নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু ও যুগ্ম আহবায়ক মনির হোসেনকে বেধরক মারধর করা হয়েছে। সেই সঙ্গে আহবায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে।
জানা যায়, গত মঙ্গলবার রাতে নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদল ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবকক দলের কমিটি ঘোষণা করা হয়। আর এই মহানগর কমিটির যুবদলে আহবায়ক পদ পাওয়া মনিরুল ইসলাম সজল এবং মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটি নিয়ে নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়। তারই অংশ হিসেবে মহানগর যুবদলের পদবঞ্চিত নেতা মাজহারুল ইসলাম জোসেফের অনুসারীরা গতকাল রাত থেকে সংঘবদ্ধ হতে থাকেন হামলার জন্য। সেই সাথে এদিন বিকালে মহানগর বিএনপির কালো পতাকা মিছিলের পূর্বে আয়োজিত সমাবেশে জোসেফের অনুসারীরা হামলা চালান। ওই সমাবেশে যাকে পেয়েছেন তাদের উপরই হামলা করা হয়েছে।
এ সময় পথচারী, সাংবাদিকসহ বিএনপির অন্ততঃ ১২ জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছে। তাদের বিভিন্ন হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। হামলাকারীরা শহরের প্রধান সড়কে কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুর করেন। এ সময় ঘটনাস্থলের চারপাশে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশ টিয়ারসেল নিক্ষেপ করলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে মুখে কালো কাপড় বেঁধে মৌন মিছিলের জন্য নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে জড়ো হতে থাকে নেতা-কর্মীরা। এ সময় নেতৃবৃন্দের বক্তব্য চলাকালে বিকাল ৪টার দিকে লাঠি-সোঠা নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায় মহানগর যুবদলে পদবঞ্চিত মাজাহারুল ইসলাম জোসেফ সমর্থকরা। তারা নেতা-কর্মীদের এলোপাতাড়ি লাঠিপেটা করে। এবং ব্যানার, ফেস্টুন ছিড়ে ফেলে এবং মাইক ভাঙচুর করে। একপর্যায়ে ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্কের সৃষ্টি করে হামলাকারীরা। পরে ব্যাটারিচালিত একটি স্কুটারসহ নগরীর প্রধান সড়কে কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুর করে। এসময় পথচারী, সাংবাদিকসহ কমপক্ষে ১০ জন বিএনপির নেতাকর্মী আহত হয়েছে।
এদিকে হামলাকারীদের তাণ্ডব চলাকালে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানা পুলিশের একটি টিমকে ঘটনাস্থলের কয়েকগজ দুরে নীরব থাকতে দেখা গেছে। তবে তাণ্ডব চালিয়ে হামলাকারীরা ফিরে যাওয়ার সময় পুলিশ টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে। পরে বিএনপির নেতা-কর্মীরা পুনরায় জড়ো হয়ে মুখে কালো কাপড় বেঁধে নগরীতে মৌন মিছিল করেন।
মহানগর বিএনপির আহবায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, যারা হামলা চালিয়েছে তারা সরকারি দলের এজেন্ট। সরকারি দলের নির্দেশে তারা আমাদের কর্মসূচিতে হামলা চালিয়েছে। কিন্তু হামলা চালিয়ে তারা আমাদের কর্মসূচি ব্যর্থ করতে পারেনি।
সদর মডেল থানার ওসি আনিচুর রহমান জানান, বিএনপির কর্মসূচিতে বিএনপির দু’গ্রুপের মধ্যে মারামারি হয়েছে। পরে পুলিশ কয়েক রাউন্ড টিয়ার সেল ছুড়ে পরিস্থিতি শান্ত করে।