1. Home
  2. বাণিজ্য
  3. যুক্তরাষ্ট্রের শাস্তিমূলক ৫০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর, চাপে ভারত
যুক্তরাষ্ট্রের শাস্তিমূলক ৫০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর, চাপে ভারত

যুক্তরাষ্ট্রের শাস্তিমূলক ৫০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর, চাপে ভারত

0
  • 2 weeks ago,

আজ (বুধবার) থেকে ভারতীয় অনেক পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ মার্কিন শুল্ক কার্যকর হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন নির্বাহী আদেশের মধ্য দিয়ে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে। ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

পোশাক, রত্ন ও গহনা, জুতা, ক্রীড়া সামগ্রী, আসবাবপত্র এবং রাসায়নিকের মতো পণ্যের ওপর মোট ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করা হয়েছে যা মার্কিন প্রশাসন কর্তৃক আরোপিত সর্বোচ্চ শুল্ক এবং ব্রাজিল ও চীনের সমতুল্য।

তবে ফার্মাসিউটিক্যালস এবং কম্পিউটার চীপের মতো পৃথকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এমন খাতগুলোর জন্য শুল্ক ছাড় এখনও অব্যাহত রয়েছে।

চলতি বছরের আগস্টের শুরুতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক হার আরোপ করেছিলেন। পরবর্তীতে রাশিয়া থেকে তেল কেনার অভিযোগে তা বাড়িয়ে ৫০% করা হয়েছে। শুধু তাই নয় ট্রাম্প সরাসরি ভারতের সমালোচনা করতেও দ্বিধা করেনি। ভারতের চরম শত্রু পাকিস্তানকে কোলে বসিয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপকে ‘অনুপযুক্ত, উসকানিমূলক ও অযৌক্তিক’ বলে উল্লেখ করেছে।

এদিকে ভারতীয় পণ্যে ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেওয়ার পর ভারতের প্রধান টেক্সটাইল হাব তিরুপুর, নয়ডা ও সুরাটের বিভিন্ন কারখানায় উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে মার্কিন বাজারে ভারতের রপ্তানি মারাত্মক হুমকিতে পড়েছে বলে জানিয়েছে ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান এক্সপোর্ট অর্গানাইজেশনস (এফআইইও)।

এক বিবৃতিতে সংগঠনটির সভাপতি এস সি রালহান বলেন, টেক্সটাইল ও পোশাকশিল্প এরই মধ্যে ভিয়েতনাম ও বাংলাদেশের মতো স্বল্প ব্যয়ের প্রতিদ্বন্দ্বীর কাছে বাজার হারাচ্ছে। এখন ৫০ শতাংশ পর্যন্ত মার্কিন শুল্ক কার্যকর হলে ভারতীয় পণ্যের প্রতিযোগিতার ক্ষমতা আরও কমে যাবে। তিনি সতর্ক করে বলেন, প্রায় ৫৫ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্রগামী ভারতীয় রপ্তানি, যার পরিমাণ প্রায় ৪৭-৪৮ বিলিয়ন ডলার, এখন মূল্য অসুবিধার কারণে অপ্রতিযোগিতামূলক হয়ে পড়বে।

এই সিদ্ধান্তে ভারতে অর্থনীতিতে যে ধরনের প্রভাব পড়তে পারে:

মার্কিনির শীর্ষ কোম্পানিগুলোর দুই-তৃতীয়াংশের অফশোর অপারেশন আছে ভারতে। শুল্কের চাপ সেই সম্পর্ককে নড়বড়ে করতে পারে।

বহু মার্কিন কোম্পানির কল সেন্টার ভারতে। সেগুলোয় নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

বিশ্বের পঞ্চম এবং ষষ্ঠ বৃহত্তম শেয়ারবাজার (ভারতের জাতীয় শেয়ারবাজার এবং মুম্বাই শেয়ারবাজার) ভারতে এবং এগুলোতে ব্যাপক পরিমাণে বিদেশি বিনিয়োগ আছে। ট্রাম্পের এই শুল্কের কারণে এই শেয়ারবাজারগুলোর স্থিতিশীলতা হুমকির মুখে পড়বে।

নতুন বৈশ্বিক বাণিজ্য কাঠামোয় ভারত অসুবিধায় পড়বে। বিশ্বের বড় একটা বাজারে এই ধরনের শুল্কের কারণে এই বাজার খতির মুখে পড়লেও আবার কিছু দেশ যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানিতে বাড়তি সুবিধা পেতে পারে।

এই ঘটনার পর থেকে ভারত আরো বেশী চীন ও রাশিয়ার কাছাকাছি চলে যেতে পারে যা পশ্চিমা বিরোধী শক্তিশালী ও কার্যকর একটি জোট গঠনের পথকে সুগম করতে পারে। অনেকেই ব্রিকস এর ক্রমবর্ধমান শক্তিশালী অবস্থাকে তারই প্রাথমিক নিদর্শন বলেবমনে করছেন। এই ঘটনা অবশ্য আরও একটা বিষয় মনে করিয়ে দেয় আন্তর্জাতিক সম্পর্কে “পরম বন্ধু বা চরম শত্রু” বলতে কিছু নেই। রাষ্ট্রের স্বার্থে বন্ধু যে কোনও সময় শত্রু হতে পারে, শত্রু হতে পারে পরম বন্ধু।

নিউজ টুডে বিডি/নিউজ ডেস্ক