1. Home
  2. ভিডিও
  3. ক্যম্পাস
  4. রাজশাহী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে শিক্ষার্থীরা
রাজশাহী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে শিক্ষার্থীরা

রাজশাহী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে শিক্ষার্থীরা

0
  • 9 months ago,

কোটা বৈষম্য নিরসন করে সংসদে আইন পাসের লক্ষ্যে জরুরি অধিবেশনের দাবিতে সারা দেশের সঙ্গে সমন্বয় রেখে রাজশাহী জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদানের জন্য গণপদযাত্রা করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা। রোববার (১৪ জুলাই) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে থেকে এ কর্মসূচি শুরু করেন তারা।

শহরের সাহেব বাজার এলাকায় আসার পর রাজশাহী কলেজ, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ এবং রুয়েটের শিক্ষার্থীরাও এ গণপদযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন।

এ সময় শিক্ষার্থীরা, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’, ‘দিয়েছি তো রক্ত আরও দিব রক্ত’, ‘জোহা স্যারের স্মরণে, ভয় করি না মরণে’, ‘দফা এক দাবি এক কোটা নট কামব্যাক’, ‘হাইকোর্ট না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।

প্রখর রোদ আর তীব্র দাবদাহ উপেক্ষা করে আড়াই ঘণ্টা হাঁটার পর দুপুর দেড়টার সময় পদযাত্রা নিয়ে শিক্ষার্থীরা রাজশাহী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বসে পড়েন। এরপর শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধিদল স্মারক নিয়ে জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদের কার্যালয়ে প্রবেশ করে।

পরে জেলা প্রশাসক বাইরে এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বলেন, সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে আমি এটা গ্রহণ বা বর্জন কিছুই করতে পারছি না। আপনারা যেহেতু আমার কাছে দিয়েছেন আমি এটা সরকারের কাছে পাঠাব। তবে লেখাপড়ার যেন ক্ষতি না হয় এদিকটাও খেয়াল রাখতে হবে।

স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, ছাত্রসমাজের শেষ আশ্রয়স্থল হিসেবে আপনার কাছে জানাচ্ছি জাতীয় সংসদে জরুরি অধিবেশন ডেকে সরকারি চাকরিতে সব গ্রেডে কোটার যৌক্তিক সংস্কার করবেন। হাইকোর্টের রায়ে বলা হয়েছে, সরকার চাইলে কোটা পরিবর্তন বা পরিবর্ধন করতে পারবে। ছাত্রসমাজ দীর্ঘদিন ধরে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে রাজপথে ঝড়-বৃষ্টি-খরতাপকে উপেক্ষা করে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করে যাচ্ছে। অথচ সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের দাবি মেনে নেওয়ার ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। আমাদের কারণে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হোক তা আমরা কখনোই চাই না। আমরা দ্রুতই পড়ার টেবিলে ফিরে যেতে চাই।

স্মারকে আরও উল্লেখ আছে, ছাত্রসমাজ আশা রাখে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জাতীয় সংসদে জরুরি অধিবেশন ডেকে সরকারি চাকরিতে কোটার যৌক্তিক সংস্কার করতে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। অন্যথায় নিজেদের অধিকার রক্ষায়, বৈষম্যমুক্ত ও মেধাভিত্তিক বাংলাদেশ নির্মাণে আমরা আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে বাধ্য হবো।

রাবির ম্যানেজমেন্ট স্টাডিস বিভাগের শিক্ষার্থী গোলাম রাব্বিল বলেন, ৫৬ শতাংশ কোটা সরকারি চাকরিতে থাকলে সমাজে একটা বিশেষ শ্রেণির উদ্ভব হবে। এই শ্রেণি একসময় বুর্জোয়া সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলবে যেখানে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার সাধারণ বিষয়ে পরিণত হবে। যেমন একজন মুক্তিযোদ্ধা একটি নির্দিষ্ট ভাতা পাচ্ছেন এবং তার সন্তানও ধরেন চাকরি করে। পরিবারটা সমাজে মানসম্মত জীবনযাপন করতে পারে। এমতাবস্থায় ওই পরিবারের তৃতীয় প্রজন্ম কোটায় আবার‌ চাকরি পেলে অনেক নিম্নবিত্ত শ্রেণির শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হবে। এতে করে সমাজে সম্পদের সুষমবণ্টন হবে না, যা মুক্তিযোদ্ধার চার নীতির অন্যতম সমাজতন্ত্রের বিরোধী। এমতাবস্থায় কোটা পদ্ধতির সংস্কার করে বুর্জোয়া শ্রেণি সমাজব্যবস্থা রুখে দিতে, সমাজে সাম্য ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে, কোটার পরিমাণ ৫ শতাংশে আনা সময়োপযোগী দাবি‌।

পরে প্রশাসনের দেওয়া পাঁচটি বাসে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে ক্যাম্পাসে ফেরেন শিক্ষার্থীরা।

এর আগে গত ৬ জুলাই থেকে সারা দেশের মতো রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও কোট সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনে নামেন। এরপর কয়েক দিন ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক, ঢাকা-রাজশাহী রেলপথ অবরোধ করে কোটা সংস্কারের দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।