1. Home
  2. ধর্ম
  3. ইসলামী জীবন
  4. শরীয়তের দৃষ্টিতে হারাম খাদ্য ও পানীয়
শরীয়তের দৃষ্টিতে হারাম খাদ্য ও পানীয়

শরীয়তের দৃষ্টিতে হারাম খাদ্য ও পানীয়

0
  • 2 hours ago,

প্রত্যেক মুসলমানের জন্য অপরিহার্য হলো হালাল বা বৈধ খাবার গ্রহণ করা। রাসুল (স:) বলেছেন, হালাল খাবার গ্রহণ দোয়া কবুলের পূর্বশর্ত। কোরআনের বহু আয়াত ও হাদিসে বারবার হারাম খাবার থেকে দূরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা একে অন্যের সম্পদ অন্যায়ভাবে ভক্ষণ করিও না।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৮)

আমরা সাধারণত দুই ধরনের খাবার গ্রহণ করে থাকি। একটি পশু-পাখি, অপরটি উদ্ভিদ ও শাকসবজি। পশু-পাখির ক্ষেত্রে কিছু নিদর্শন ও বিধি-বিধান লক্ষ্য করলে সহজেই হালাল-হারাম নির্ণয় করা যায়। যে প্রাণীতে হারামের কোনো চিহ্ন পাওয়া যাবে, তা খাওয়া জায়েজ নেই। ইসলামে দাঁতবিশিষ্ট হিংস্র জন্তু যেমন-বাঘ-সিংহ, নেকড়ে বাঘ, চিতা বাঘ, হাতি, কুকুর, শিয়াল, শূকর, বিড়াল, কুমির, কচ্ছপ, সজারু ও বানর ইত্যাদি হারাম। 

হিংস্র জন্তুর পাশাপাশি পাঞ্জাধারী হিংস্র পাখি খাওয়াও হারাম। যেমন-ঈগল, বাজ, শ্যেন, পেঁচা ইত্যাদি। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘রাসুল (সা.) দাঁতবিশিষ্ট প্রত্যেক হিংস্র জন্তু ও নখ দিয়ে শিকারকারী প্রত্যেক হিংস্র পাখি খেতে নিষেধ করেছেন। ’ (মুসলিম, হাদিস নং : ১৯৩৪)
ইসলামে নোংরা ও নাপাক কিছু খাওয়া হারাম। যেমন- মৃত জন্তু, পোকা-মাকড়, কীট-পতঙ্গ, প্রবাহিত রক্ত এবং সেসব খাবারে কোনো প্রকার উপকার নেই যেমন বিষ, মদ, খড়কুটা, মাদকদ্রব্য, তামাক ও অন্যান্য নেশজাতীয় দ্রব্য ইত্যাদি। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘তাদের জন্য তিনি (রাসুল) পবিত্র বস্তু হালাল করেন আর অপবিত্র বস্তু হারাম করেন।’ (সুরা আরাফ, আয়াত : ১৫৭)

আল্লাহ নাম নেওয়া ছাড়া জবাইকৃত হালাল পশু-পাখিও হারাম। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর তোমরা তা থেকে আহার করো না যার উপর আল্লাহর নাম উচ্চারণ করা হয়নি এবং নিশ্চয় তা সীমালঙ্গন। ’ (সুরা আন-আম, আয়াত : ১২১) হালাল প্রাণী জবাই শুদ্ধ না হলে, জবাইকৃত সে প্রাণীও হারাম। আবার জীবিত প্রাণী থেকে আলাদা করা গোশতও মৃত প্রাণীর মতো হারাম। জবাই করার কিছু ইসলামী নিয়ম-নীতি ও শর্ত রয়েছে। সেগুলো পূর্ণ না হলে, জবাইকৃত হালাল জন্তুও হারাম হয়ে যায়। 

সব ধরনের মৃত প্রাণী এবং প্রবাহিত রক্ত হারাম। তবে দুই ধরনের মৃত প্রাণী ও রক্ত হালাল। রাসুল (সা.) বলেন, ‘আমাদের জন্য দু’প্রকার মৃত প্রাণী ও দু’প্রকার রক্ত হালাল করা হয়েছে। মৃত প্রাণী হলো, মাছ ও পঙ্গপাল। আর রক্ত হলো, কলিজা ও প্লীহা। ’ (মুসনাদ আহমদ, হাদিস নং : ৫৭২৩, ইবনু মাজাহ, হাদিস নং: ৩২১৮)

খাদ্য ও পানীয়ের মূল প্রকৃতি হচ্ছে বৈধ ও হালাল হওয়া। সে সূত্রে বিভিন্ন উদ্ভিদ, ফল, শস্য ইত্যাদি থেকে তৈরিকৃত পানীয় হালাল। তবে যত ধরনের খাবার ও পানীয় নেশা তৈরি করে, তা খাওয়া বা পান করা জায়েজ নেই। যেমন, গাঁজা, আফিম, ইয়াবা, বিয়ার, শ্যাম্পেইন, হেরোইনসহ এ জাতীয় অন্যান্য নেশাজাতীয় দ্রব্য। একই সঙ্গে যা কিছু শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর, তাও জায়েজ নেই। যেমন, বিষ, সিগারেট ও এ জাতীয় অন্যান্য খাবার ও পানীয়।

তবে জীবন বাঁচাতে এসব ক্ষেত্রে কিছুটা শিথিলতা আছে। বেঁচে থাকার জন্য অন্য কোন খাদ্য না থাকলে যতটুকু খেলে বেঁচে থাকা যায়, সেই পরিমাণ খাদ্য (সাধারণত অবস্থায় হারাম) খাওয়া যাবে। আল্লাহ তায়ালা কোরানুল কারীমে বলেন ”তিনি তো তোমাদের জন্য কেবল মৃত জন্তু, রক্ত ও শুকরের গোশত হারাম করেছেন এবং সেই জন্তুও, যার প্রতি আল্লাহ ছাড়া অন্যের নাম উচ্চারণ করা হয়। হ্যাঁ, কোনও ব্যক্তি যদি চরম অনন্যোপায় অবস্থায় থাকে (ফলে এসব বস্তু হতে কিছু খেয়ে নেয়) আর তার উদ্দেশ্য মজা ভোগ করা না হয় এবং সে (প্রয়োজনের) সীমা অতিক্রমও না করে, তবে তার কোনও গুনাহ নেই। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। সূরা বাকারা, আয়াত : ১৭৩।

নিউজ টুডে বিডি/নিউজ ডেস্ক