
রাজধানীর ধানমন্ডির নিজ বাসা থেকে সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হককে (অব.) গ্রেফতার করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) সকাল ৮টার দিকে তাকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)|
ডিবির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার কিছু সময় পর সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হককে তার ধানমন্ডির বাসা থেকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি। তাকে এরই মধ্যে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে|’
২০১০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর এবিএম খায়রুল হক দেশের ১৯ তম প্রধান বিচারপতি হিসাবে শপথ নেন। পরের বছর (২০১১ সাল) ১৭ মে ৬৭ বছর পূর্ণ হওয়ায় তিনি অবসর গ্রহণ করেন|
তাকে তিন বছরের জন্য আইন কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় ২০১৩ সালে। এই মেয়াদ শেষে কয়েক দফা একই পদে তাকে পুনর্নিয়োগ দেওয়া হয়|
গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটলে ১৩ আগস্ট এবিএম খায়রুল হক আইন কমিশন থেকে পদত্যাগ করেন। এরপর তাকে আর প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছিল না|
এদিকে সম্প্রতি জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হককে গ্রেফতার ও বিচার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করে । সংগঠনটি তাকে দেশের ‘বিচার বিভাগ ও গণতন্ত্র ধ্বংসের মূল কারিগর’উল্লেখ করে বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানায়|
প্রসঙ্গত, বিচারাঙ্গনে এ বিচারপতির বেশ কয়েকটি রায় চরম বিতর্ক সৃষ্টি করেছিল। তিনি নিজে আওয়ামী আমলে নানাভাবে সুবিধাপ্রাপ্ত হয়েছেন। কয়েকজন জ্যেষ্ঠ বিচারপতিকে ডিঙিয়ে তাকে প্রধান বিচারপতি করা হয়েছিল । এ ছাড়া প্রধান বিচারপতি থাকাকালে ত্রাণ তহবিলের টাকায় নিজের চিকিৎসা করে সমালোচিত হয়েছিলেন|
অবসর নেওয়ার কয়েকদিন আগে ত্রয়োদশ সংশোধনী মামলায় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেন এই বিচারপতি। এতে দেশে রাজনৈতিক সংঘাতের পথ উন্মুক্ত হয়|
এবিএম খায়রুল হক রাজনৈতিক একটি বিষয়কে আদালতের আওতাধীন করে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ‘স্বাধীনতার ঘোষক নন”বলেও রায় দিয়েছিলেন । এ ছাড়া বিতর্কিত একাধিক বিচারপতিকে শপথ পড়ানো, আগাম জামিনের এখতিয়ার কেড়ে নেওয়া, খালেদা জিয়াকে ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা, বিতর্কিত একাধিক বিচারপতিকে শপথ পড়ানো, ক্ষমতার অপব্যবহারসহ নানা অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে|
খায়রুল হকের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যেই বেশ কয়েকটি মামলা হয়েছে। শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর গত ১৮ আগস্ট ঢাকা আইনজীবী সমিতির সদস্য ইমরুল হাসান বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলায় খায়রুল হকের বিরুদ্ধে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় পরিবর্তন ও জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয়|
নিউজ টুডে বিডি/ন্যাশনাল ডেস্ক