
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘আমরা যে কোনো মূল্যে অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাই। এই নির্বাচনের মাধ্যমে যে অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রা, সেটা আরও গতিময় হবে। দেশের ভবিষ্যৎও সুসংহত হবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।’
আজ বুধবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি। ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘গণতন্ত্রের অভিযাত্রা ৭ ই জানুয়ারি নির্বাচন। ২০৪১ সালে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের যে লক্ষ্য সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে এই নির্বাচন বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।’
আশঙ্কার কাছে আশা কখনোই পরাজিত হবে না উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ভোটার উপস্থিতি সন্তোষজনক হবে, সে আশাই আমরা করছি। আশঙ্কা তো থাকেই। আশঙ্কা আশঙ্কার জায়গায়। আশঙ্কার কাছে আশা কখনোই পরাজিত হবে না। আশা বেঁচে থাকবে।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব পালন করতে পারছেন বলেই নির্বাচনে আচরণবিধির কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। আচরণবিধি যেখানে লঙ্ঘন হয়েছে, সেখানেই তার ব্যবস্থা নিয়েছে। কর্তব্য পালনের কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ করছে না। নির্বাচন কমিশন স্বাধীন দায়িত্ব পালনের বিষয়টি যত আইনগতভাবে যথাযথভাবে পালন করতে পারবে, ততই নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা এটা নিশ্চিত হবে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপির-জামায়াত আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে লিফলেট বিতরণ করছে। এখান থেকে তারা বেরোতে পারছে না। তাদের নেতিবাচক কর্মসূচি, তাদের নাশকতা কর্মসূচি জনগণ অযোগ্য করেছে। আজকে তারা হরতাল-অবরোধ দিলেও যেখানে যানজট হওয়ার সেখানে যানজট হচ্ছে। দূরবর্তী যানবাহনও চলাচল করছে।’
বিএনপি বলে একটা, করে আরেকটা মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘৪ তারিখ পর্যন্ত তারা লিফলেট বিতরণ করবে, এরপর তাদের ভূমিকাটা কী, সেটা আমরা লক্ষ্য করব।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমানের এক বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তিনি ভুল বলেননি। ওনাদের দর্শন, ওনাদের রাজনীতি, ওনাদের নির্বাচন যেভাবে করতেন। আমাদের দলের নেতা-কর্মীরা সতর্ক অবস্থানে আছে। নির্বাচন শেষে এবং তার পরবর্তীতে আমাদের নেতা-কর্মীরা সতর্ক অবস্থানে থাকবে। আমাদের নেতা-কর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে দেশ বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন নির্বাচন কমিশনারেরা, এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আ. লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের কমিশনাররা, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, তারা তাদের অভিমত ব্যক্ত করছেন। এখানে আওয়ামী লীগের চিন্তা-ভাবনার মিল না থাকলেও, আমরা কিছু বলব না। আমাদের সঙ্গে যদি অমিলও হয়, আমরা কিছু বলব না।’
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের বিবৃতি প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা জানি সংস্থাটিতে কর্মরত আছেন তারেক রহমানের আত্মীয় আইরিন খান। যিনি এক সময় ডেইলি স্টারে কাজ করেছেন। তাদের মন্তব্যটা কেমন হবে, আমরা আগেও লক্ষ্য করেছি। একটা বৈরী মনোভাব এ সরকারের প্রতি তাদের রয়েছে। বাংলাদেশেও টিআইবি, সুজনের যে ভূমিকা এগুলো সব একই সূত্রে গাঁথা।’
আগামীকাল বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগের সর্বশেষ নির্বাচনী জনসভা হবে বলে জানান কাদের। তিনি বলেন, ‘আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) জাতির উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী ভাষণ দেবেন। ১১ দেশের ৮০ পর্যবেক্ষক আসবেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা আগে থেকেই ঢাকায় আছেন। বিভিন্ন দেশ থেকে ৫০ জন বিদেশি সংবাদকর্মী এসেছেন। আগামী ৫ তারিখ সকাল ৮টায় তাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দল মতবিনিময় করবেন।’ এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেও জানান তিনি।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন—আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপদপ্তর সায়েম খান প্রমুখ।