
আট দিনের অভিযান শেষে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়ায় ডুবে যাওয়া ফেরি রজনীগন্ধাকে উদ্ধার করে নদীর তীরে আনা হয়েছে। পদ্মা থেকে তুলে আনা হয়েছে ফেরির সঙ্গে ডুবে যাওয়া নয়টি যানবাহনও।
বুধবার (২৪ জানুয়ারি) রাত পৌনে ১১টায় ফেরিটি উদ্ধার করে ঘাটের পূর্বে সৌরবিদ্যুৎ প্যানেল প্রকল্প এলাকায় নোঙর করে রাখা হয়েছে।
বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্পোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা অঞ্চলের উপ-মহাব্যবস্থাপক শাহ খালেদ নেওয়াজ।
তিনি জানান, দিনব্যাপী অভিযান চালিয়ে উদ্ধারকারী জাহাজ “প্রত্যয়” ফেরি “রজনীগন্ধাকে” পানির নিচ থেকে তুলে আনতে সক্ষম হয়। পরে এটিকে সোজা করে রাতে ঘাটে টেনে নিয়ে আসে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ডুবে যাওয়ার পর ফেরিটি উল্টে যায়। স্রোতের কারণে নদীর তলদেশে পলিমাটি জমে ফেরিটি আটকে যায়। তাই ২৪০ টন ওজনের ফেরিটি ৩০০ টন ছাড়িয়ে যায়। উদ্ধারকারী জাহাজ “হামজা” ও “রুস্তম” দিয়ে ওঠানো সম্ভব হয়নি। কারণ, এ দুটি উদ্ধারকারী জাহাজের ৮০ থেকে ৯০ টন ভরের বস্তুকে ওঠানোর সক্ষমতা আছে।
শুক্রবার দুপুরে বিআইডব্লিউটির সবচেয়ে শক্তিশালী উদ্ধারকারী জাহাজ “প্রত্যয়”কে দুর্ঘটনাস্থলে আনা হয়। তবে এর সক্ষমতা ২৫০ টন হওয়ায় ফেরিটিকে উদ্ধারে এই শক্তিশালী জাহাজটিও ব্যর্থ হয়। পরবর্তীতে নারায়ণগঞ্জ থেকে অনুসন্ধানী জাহাজ “ঝিনাই-১” আনা হয়। এর মাধ্যমে নদীর তলদেশে ফেরিটির সঠিক অবস্থান জানা যায়। এরপর ডুবুরিরা ফেরিতে এয়ার লিফটিং ব্যাগ স্থাপন করে পাম্প যন্ত্রের মাধ্যমে বাতাস দিতে থাকেন। এ উদ্ধার অভিযানে নৌবাহিনী ও বিআইডব্লিউটিএর উদ্ধারকারী দল অংশ নেয়।
এ বিষয়ে নৌবাহিনীর ডুবুরি দলের প্রধান লেফটেন্যান্ট শাহ পরান বলেন, “নদীতে প্রচণ্ড স্রোত, কুয়াশা ও শীতের কারণে উদ্ধার অভিযান কিছুটা ব্যাহত হয়। বিভিন্ন উদ্ধার প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে ফেরিটিকে নদীর তলদেশ থেকে ওপরে ওঠানো সম্ভব হয়েছে।
গত ১৭ জানুয়ারি সকাল ৮টায় পাটুরিয়া ৫ নম্বর ফেরিঘাটের অদূরে নয়টি মালবাহী যানবাহন নিয়ে ডুবে যায় ফেরি “রজনীগন্ধা-৭”। এ সময় নিখোঁজ হন ফেরির সহকারী ইঞ্জিন মাস্টার হুমায়ূন কবির। ঘটনার পাঁচ দিন পর ২২ জানুয়ারি দুর্ঘটনাস্থল থেকে ১৩ কিলোমিটার দূরে মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের বাহাদুরপুর এলাকার পদ্মা নদী থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।