1. Home
  2. বাংলাদেশ
  3. স্ত্রীকে ব্যবসায়ী দে‌খিয়েও শেষ রক্ষা হলো না গোয়েন্দা কর্মকর্তার
স্ত্রীকে ব্যবসায়ী দে‌খিয়েও শেষ রক্ষা হলো না গোয়েন্দা কর্মকর্তার

স্ত্রীকে ব্যবসায়ী দে‌খিয়েও শেষ রক্ষা হলো না গোয়েন্দা কর্মকর্তার

0
  • 11 months ago,

আকরাম হোসেন এক‌টি গোয়েন্দা সংস্থার সহকারী প‌রিচালক। ঢাকা ও নাটোরে গড়েছেন অঢেল সম্পদ। স্ত্রী সুরাইয়া পারভীনকে ব্যবসায়ী দা‌বি করে তাঁর আয়কে এসব সম্পদের উৎস হিসেবে দে‌খি‌য়েছিলেন। কিন্তু তাতে শেষ রক্ষা হয়নি, দুর্নী‌তি দমন ক‌মিশনের (দুদক) অনুসন্ধানে ধরা পড়েছেন তিনি। আকরাম দম্প‌তির বিরুদ্ধে প্রায় ৭ কো‌টি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও দেড় কোটি টাকার বে‌শি মূল্যের সম্পদের তথ‌্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়েছে। পৃথক মামলায় সুরাইয়া পারভীনকে ২০ লাখ টাকা বে‌শি মূল্যের অবৈধ সম্পদ অর্জন করায় আসা‌মি করা হয়।

আজ মঙ্গলবার সকালে দুদকের গোপালগঞ্জ সম‌ন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপ‌রিচালক ম‌শিউর রহমান সম‌ন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা ১-এ বাদী হয়ে দুদক আইন ২০০৪-এর ২৬(২) ধারায় এবং ২৭ (১) ধারায় দুটি মামলা করেছেন।

ম‌শিউর রহমান বলেন, গোয়েন্দা কর্মকর্তা আকরাম হোসেন ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রায় ৭ কো‌টি টাকার অবৈধ সম্প‌দ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে ২৬(২) ধারার মামলায় দুজনই আসামি, অপর মামলায় শুধু স্ত্রী আসামি।

গোয়েন্দা কর্মকর্তা দম্প‌তির বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার এজাহারে বলা হয়, আকরাম হোসেন দুদকে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে ১ কোটি ৬১ লাখ ৭৯ হাজার ৫২০ টাকা মূল্যের সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন, মিথ্যা ও ভিত্তিহীন ঘোষণা প্রদান করাসহ তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে যোগসাজশে অসাধু উপায়ে অর্জিত ও তাঁর জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ ৬ কোটি ৭০ লাখ ৩৯ হাজার ৩৬২ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন করে ভোগদখলে রেখে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারা ও দণ্বিডধি, ১৮৬০-এর ১০৯ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

রেকর্ড পর্যালোচনায় দেখা যায়, দুর্নীতি দমন কমিশনে পাওয়া অভিযোগের প্রাথমিক অনুসন্ধান শেষে আকরাম হোসেনের নামে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৬(১) ধারায় সম্পদ বিবরণী দাখিলের আদেশ প্রদান করা হলে তিনি সম্পদ বিবরণীতে স্থাবর ও অস্থাবর ৬ কো‌টি ৫০ লাখ ৪ হাজার ৩৬৭ টাকার সম্পদের তথ্য দেন। এ ছাড়া দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে তাঁর কোনো দায়দেনা নেই বলেও ঘোষণা দেন। সম্পদ বিবরণী যাচাইকালে স্থাবর ও অস্থাবর ৮ কো‌টি ১১ লাখ ৮৩ হাজার ৮৮৭ টাকার সম্পদ অর্জন ও ভোগদখলে থাকার তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়। অর্থাৎ, আকরাম হোসেন ১ কো‌টি ৬১ লাখ ৭৯ হাজার ৫২০ টাকা মূল্যের সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন।

অনুসন্ধানে আকরাম হোসেনের নামে স্থাবর ও অস্থাবর মোট ৮ কো‌টি ১১ লাখ ৮৩ হাজার ৮৮৭ টাকা সম্পদ অর্জনের তথ্য পেয়েছে দুদক। ওই সম্পদ অর্জনের বিপরীতে কোনো দায়দেনা নেই বলে জানা যায়। সম্পদ অর্জনের বিপরীতে তার ব্যয় পাওয়া যায় ১৯ লাখ ৯৪ হাজার ৫৮৪ টাকা। ফলে ব্যয়সহ তার মোট সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ৮ কো‌টি ৩৬ লাখ ৯৯ হাজার ৩৮৩ টাকা। ফলে এই দম্প‌তি ৬ কো‌টি ৭০ লাখ ৩৯ হাজার ৩৬২ টাকা মূল্যের অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন বলে অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়।

এজাহারে আরও বলা হয়, আকরাম হোসেন তাঁর স্ত্রীকে ব্যবসায়ী হিসেবে দেখিয়ে তাঁর অবৈধ সম্পদকে বৈধ করার চেষ্টা চালিয়েছেন। এ ছাড়া সুরাইয়া পারভীন তাঁর স্বামীকে বেনামে প্রতিষ্ঠান খুলতে সহযোগিতা করে ও ব্যাংকে বিপুল অর্থ লেনদেন করে স্বামীর জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও ভোগদখলে রে‌খে অবৈধ সম্পদ বৈধ করতে সহযোগিতা করে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

গোয়েন্দা কর্মকর্তা আকরাম হোসেনের স্ত্রী সুরাইয়া পারভীনকে একমাত্র আসা‌মি করে অপর মামলায় বলা হয়, তি‌নি ২০ লাখ ৯৩ হাজার ৫৫১ টাকার আয়ব‌হির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন, যা দুদক আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।