
ভারতবর্ষের পবিত্র ভূমিতে ইসলাম ও তাওহিদের চর্চা নবুওয়াতের যুগ থেকেই শুরু হয়েছিল। সর্বপ্রথম সাহাবায়ে কেরামদের বরকতময় পদধূলিতে ভারতবর্ষ ধন্য হয় এবং তাদের মাধ্যমেই এখানে ইসলামের আগমন ঘটে। হজরত ওমর ফারুক (রা.)-এর যুগে ১৫ হিজরিতে রাসুল (সা.)-এর ওফাতের চার বছর পর ভারতবর্ষে সাহাবিদের আগমন শুরু হয়। আমিরুল মুমিনিন হজরত ওমর (রা.) ১৫ হিজরিতে হজরত উসমান বিন আবি আল-আস (রা.)-কে বাহরাইন ও ওমানের গভর্নর নিযুক্ত করেন। হজরত উসমান (রা.) তার শ্রদ্ধেয় ভাই হজরত হাকাম বিন আবি আল-আস (রা.)-কে একটি সেনাবাহিনীর সেনাপতি বানিয়ে ভারতের ‘থানা’ ও ‘ভারুচ’ বন্দরে পাঠান। অন্যদিকে তিনি তার দ্বিতীয় ভাই হজরত মুগিরা বিন আবি আল-আস সাকফি (রা.)-কে একটি সৈন্যবাহিনী নিয়ে পাকিস্তানের ‘দেবল’ বন্দরে পাঠান। তবে এগুলো ছিল অস্থায়ী খণ্ডযুদ্ধ, কোনো স্থায়ী সামরিক যুদ্ধ ছিল না। এ কারণেই সাধারণত ইতিহাসের বইয়ে এ সম্পর্কে কোনো কথা উল্লেখ নেই। একইভাবে বেলুচিস্তান, সিন্ধুসহ আরও কিছু এলাকায় সাহাবিদের পবিত্র জামাতের আগমন ঘটেছে, যা ‘ওয়ারুদে মাসউদ’ গ্রন্থের বর্ণনা দ্বারা প্রমাণিত।
ব্যবসা-বাণিজ্য ও দ্বীন প্রচারের লক্ষ্যে সাহাবায়ে কেরাম বিভিন্ন অঞ্চল ও দেশে ছড়িয়ে পড়েন। তাদের আবাসস্থল শুধু মক্কা-মদিনা বা আরবের কিছু অঞ্চলই ছিল না। ইতিহাসগ্রন্থে পঁচিশজন সাহাবির নাম জানা যায়, যাদের শুভাগমন উপমহাদেশে যুদ্ধের জন্য হয়েছিল। অন্যথায় ধারণা করা যায় যে, অনেক সাহাবি নিশ্চয়ই উপমহাদেশে সফর করেছেন এবং তারা এই অঞ্চলের বিভিন্ন স্থান নিজেদের আশ্রয়স্থল বানিয়েছেন। (বার সগির মে ইসলাম কে আউওয়ালিন নুকুশ ২৬)
হজরত ওমর ফারুক (রা.)-এর খেলাফত সাড়ে দশ বছর স্থায়ী ছিল। তার খেলাফতকালে ইসলামি রাষ্ট্রের পরিধি ব্যাপকভাবে বিস্তৃত হয় এবং যুদ্ধে অসাধারণ বিজয় অর্জন করে। এসব বিজয়ের ফলশ্রুতিতে ইসলামি রাষ্ট্র বর্তমান উপমহাদেশের (ভারত ও পাকিস্তান) সীমান্তেও ছড়িয়ে পড়ে। তার যুগে ১১ জন সাহাবির নাম পাওয়া যায়, যারা ভারত অঞ্চলে এসেছিলেন। তাদের নাম ও সংক্ষিপ্ত বিবরণ তুলে ধরা হবে ধারবাহিক।
ধর্ম/নিউজটুডেবিডি