1. Home
  2. ছবি
  3. আন্তর্জাতিক
  4. ইন্দোনেশিয়া: দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ভবিষ্যৎ শক্তি
ইন্দোনেশিয়া: দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ভবিষ্যৎ শক্তি

ইন্দোনেশিয়া: দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ভবিষ্যৎ শক্তি

0
  • 2 days ago,

ইন্দোনেশিয়া আস্তে আস্তে একটি শক্তিশালী দেশে রূপান্তরিত হচ্ছে। অর্থনৈতিকভাবে, দেশটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৃহত্তম অর্থনীতি এবং একটি উদীয়মান অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। সামরিক দিক থেকেও দেশটি উল্লেখযোগ্য উন্নতি করেছে এবং অস্ত্র উৎপাদন ও রপ্তানিতেও মনোযোগ দিচ্ছে। এর জন্য অনেকেই ইন্দোনেশিয়াকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ভবিষ্যৎ শক্তি হিসেবে বিবেচনা করছে।

ইন্দোনেশিয়াকে শক্তিশালী দেশে রূপান্তরের কিছু কারণ:

কৌশলগত অবস্থান

ইন্দোনেশিয়ার ভৌগোলিক অবস্থান ভারত মহাসাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরের মাঝে, যা একে একটি গুরুত্বপূর্ণ সামুদ্রিক সংযোগে পরিণত করেছে। বৈশ্বিক বাণিজ্যের প্রায় ২৫% মালাক্কা প্রণালী দিয়ে অতিক্রম করে, ফলে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সমুদ্রপথের নিয়ন্ত্রণে ইন্দোনেশিয়া বিশেষ ভূমিকা রাখে।

নাতুনা দ্বীপপুঞ্জ:

এই দ্বীপপুঞ্জ বিশাল তেল ও গ্যাসের ভাণ্ডারে সমৃদ্ধ, যা চীনের বিস্তৃত সাগর দাবির কারণে এখন উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।

অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি:

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৃহত্তম অর্থনীতি হিসেবে ইন্দোনেশিয়ার প্রবৃদ্ধি ২০২৪ সালে ৫.৩% ছুঁতে পারে। দেশটি ডিজিটাল রূপান্তরে জোর দিচ্ছে — ই-কমার্স, ডিজিটাল অবকাঠামো ও স্মার্ট সিটিতে বড় বিনিয়োগ করছে প্রতিযোগিতা বাড়াতে।

রপ্তানির প্রধান খাত:

ইন্দোনেশিয়া প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ, যা অর্থনৈতিক উন্নয়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এছাড়া পাম তেল, কয়লা, রাবার ও টেক্সটাইল ইত্যাদি রপ্তানি করে তারা প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় করে।

আসিয়ান (ASEAN)-এর গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে ইন্দোনেশিয়া RCEP গ্রহণ করেছে, ফলে চীন ও জাপানের সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্ক মজবুত করছে, পাশাপাশি ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার সাথে সম্পর্কও জোরদার করছে।

জনসংখ্যা:

দেশটির একটি বিশাল এবং তরুণ জনসংখ্যা রয়েছে, যা শ্রমশক্তি এবং বাজারের জন্য একটি ইতিবাচক দিক।

রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা:

রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং বিনিয়োগ ও ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নত করার জন্য একাধিক আইনী ও প্রশাসনিক সংস্কার করা হয়েছে, যা অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়ক।

ভারত-চীন ভারসাম্যনীতি:

চীন ইন্দোনেশিয়ার সবচেয়ে বড় বাণিজ্য অংশীদার হলেও সম্পর্ক জটিল। চীনের BRI প্রকল্পে বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ গ্রহণ করলেও দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের সামুদ্রিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা, বিশেষত নাতুনা দ্বীপপুঞ্জকে ঘিরে, দুই দেশের সম্পর্কে টানাপোড়েন তৈরি করেছে।

এ পরিস্থিতিতে ইন্দোনেশিয়া ক্রমেই ভারতের দিকে ঝুঁকছে সামরিক ও কৌশলগত সহযোগিতার জন্য।

এর মধ্যে ব্রহ্মোস মিসাইল সিস্টেম একটি উল্লেখযোগ্য চুক্তি, যা চীনা প্রভাব মোকাবিলায় ইন্দোনেশিয়ার নৌ-ক্ষমতা বাড়াচ্ছে।

পররাষ্ট্রনীতি

ইন্দোনেশিয়া ASEAN-কেন্দ্রিক কূটনীতি অনুসরণ করে, অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্র-চীন দ্বন্দ্বে কোনো পক্ষ না নিয়ে ভারসাম্য বজায় রাখতে চায়।

অন্যদিকে, ইন্দোনেশিয়াকে কিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হচ্ছে:

ভূমিকম্প ও দুর্যোগ প্রবণতা:

ইন্দোনেশিয়া একটি ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চলে অবস্থিত, যা প্রায়ই প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার হয়। 

আঞ্চলিক বৈষম্য:


ইন্দোনেশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলের মধ্যে অর্থনৈতিক বৈষম্য একটি সমস্যা। 

দক্ষ শ্রমিকের অভাব:
দক্ষ শ্রমিকের অভাব একটি চ্যালেঞ্জ যা অর্থনৈতিক উন্নয়নে বাধা দিতে পারে। 

দুর্নীতি:

দুর্নীতি একটি সমস্যা যা অর্থনৈতিক উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি করে। 

এই সমস্ত কারণ বিবেচনা করে, এটা বলা যায় যে ইন্দোনেশিয়া একটি শক্তিশালী দেশে রূপান্তরিত হচ্ছে, তবে কিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে

নিউজ টুডে বিডি/নিউজ ডেস্ক