
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। এটি রাকসুর ১৫তম নির্বাচন। সর্বশেষ রাকসু নির্বাচন (১৪তম) হয়েছিল ১৯৯০ সালের ২৯ জুলাই। আর চাকসু নির্বাচনে ইসলামি ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’ ভিপি ও জিএসসহ মোট ২৪টি পদে বিজয়ী হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯টি একাডেমিক ভবনে স্থাপিত ১৭টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ চলবে। বিকাল ৫টা থেকে কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে কেন্দ্রীয়ভাবে ফল গণনা শুরু হবে।
দীর্ঘদিন পর এ নির্বাচন হওয়ায় উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থী, প্রার্থীসহ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার। ক্যাম্পাসজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে উৎসবমুখর পরিবেশ। রাকসুতে ২৩টি পদের বিপরীতে ২৪৭ জন প্রার্থী অংশ নিচ্ছেন। সেখানে আছে আটটি পূর্ণাঙ্গ প্যানেল। মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে ছাত্রদল সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ নতুন প্রজন্ম এবং ছাত্রশিবির সমর্থিত সম্মিলত শিক্ষার্থী জোট প্যানেলের মধ্যে, এমন আভাস দিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন পদের প্রার্থীরাও।
এদিকে রাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ছাড়াও আশপাশের এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রবেশদ্বারে বুধবার সকাল থেকেই শুরু হয়েছে বহিরাগত ও যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ। বুধবার সকালে সিনেট ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে ভোটগ্রহণকালীন ও পরবর্তী নিরাপত্তাব্যবস্থার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী রাকসুর ২৩টি পদের বিপরীতে ২৪৭ জন, প্রতিটি হল সংসদের ১৫টি করে ১৭টি হলের ২৫৫টি পদের বিপরীতে ৫৯৭ জন, সিনেটে ছাত্র প্রতিনিধির ৫টি পদের বিপরীতে ৫৮ জনসহ ২৮৩ পদের জন্য রেকর্ডসংখ্যক ৮৬০ জন প্রার্থী ভোটযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক নজরুল ইসলামের দাবি, অতীতের ১৪টি রাকসু নির্বাচনের ইতিহাস পর্যালোচনায় দেখা যায়, রাকসু-২০২৫-এ সবচেয়ে বেশিসংখ্যক প্রার্থী ভোটযুদ্ধে অংশ নিচ্ছেন।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’ ভিপি ও জিএসসহ মোট ২৪টি পদে বিজয়ী হয়েছে।
আজ ভোর সাড়ে ৪টায় সপ্তম নির্বাচনের ফল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনির উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা-পূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রার্থী ও ভোটারদের অংশগ্রহণ ছিল উৎসবমুখর।’
সহসভাপতি (ভিপি) পদে নির্বাচিত হয়েছেন ছাত্রশিবির সমর্থিত মো. ইব্রাহিম হোসেন। ইতিহাস বিভাগের এমফিল শিক্ষার্থী ও সংগঠনটির চট্টগ্রাম মহানগর দক্ষিণের সভাপতি তিনি। ইব্রাহিম পেয়েছেন ৭ হাজার ৯৮৩ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদল সমর্থিত সাজ্জাদ হোসেন পেয়েছেন ৪ হাজার ৩৭৪ ভোট।
সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ৮ হাজার ৩১ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন একই প্যানেলের সাঈদ বিন হাবিব। ইতিহাস বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সাহিত্য সম্পাদক তিনি। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের মো. শাফায়াত পেয়েছেন ২ হাজার ৭৩৪ ভোট।
চাকসুর এবারের নির্বাচনে মোট ২৬টি পদের মধ্যে ২৪টি বিজয় তুলে নেয় শিবির সমর্থিত প্যানেল। ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল শুধু সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে জয়লাভ করে। এজিএস পদে ছাত্রদলের আইয়ুবুর রহমান পেয়েছেন ৭ হাজার ১৪ ভোট, শিবির সমর্থিত সাজ্জাদ হোছন পেয়েছেন ৫ হাজার ৪৫ ভোট। এছাড়া সহ খেলাধুলা ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে জয়লাভ করেছেন তামান্না মাহবুব নামে এক ছাত্রী।
নিউজ টুডে বিডি/নিউজ ডেস্ক