
একাত্তরে প্রকৃত স্বাধীনতা অর্জিত হয়নি, চব্বিশেই দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।
তিনি বলেন, ‘যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছেন, এর চেতনার ফেরি করে বেড়াচ্ছেন; তাদেরকে বলব, আপনারা কিন্তু রাজনৈতিক স্বার্থে, ক্ষমতার স্বার্থে দিল্লির কাছে দেশ বিক্রির জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন। সেদিন বাংলাদেশের প্রকৃত স্বাধীনতা অর্জিত হয়নি। যে কারণেই চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষ বলেছে, এটাই আমাদের দ্বিতীয় স্বাধীনতা।’
বুধবার (২৬ মার্চ) স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামীর অপ্রতিরোধ্য ইসলামী আন্দোলনের অগ্রযাত্রা, জনপ্রিয়তা, গণজাগরণ প্রতিরোধ করতে সব সময় একটা শক্তি, একটা মহল, স্বাধীনতা আর মুক্তিযুদ্ধকে জামায়াতে ইসলামীর বিপক্ষে দাঁড় করানোর একটা অপপ্রয়াস ও অপচেষ্টা করে থাকে। আওয়ামী লীগ এ কাজে সিদ্ধহস্ত। তারা তো বিদায় নিয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ ছাড়াও ফ্যাসিবাদ বিরোধী সংগ্রামে আমরা যারা রাজপথে ছিলাম, দূর্ভাগ্যজনকভাবে সেইসব সংগ্রামী নেতাদের মধ্য থেকেও কিছু লোকের জামায়াত বিরোধিতার কথাগুলো, ভাষাগুলো আওয়ামী ফ্যাসিবাদের ভাষার সঙ্গে হুবহু মিলে যায়।’
তিনি বলেন, ‘কিন্তু তারা ভুলে যান- জামায়াতে ইসলামী যখন স্বৈরাচারবিরোধী, ফ্যাসিবাদবিরোধী, ভোটাধিকারের আন্দোলনে তাদের সঙ্গে থাকে, তখন বলে আমাদের সঙ্গী। তদের সঙ্গে না থাকলে বলে এরা জঙ্গি। সঙ্গে থাকলে আমাদের সব গুনাহ মাফ। নাম আর বলতে চাই না, জনগণ তাদের চেনে।’
তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী আদর্শিক কারণেই দেশ ও স্বাধীনতাকে ভালোবাসে। একাত্তরের মীমাংসিত বিষয় সামনে এনে জামায়াতকে এখনও বিতর্কিত করার চেষ্টা হয়।
এ সময় তিনি বলেন, ৫৪ বছর পরে এসে যারা বক্তৃতা শেষে বলেন একাত্তরকে ভুলে যাবেন না, তারা যখন দেশ শাসন করেছেন ১২ থেকে ১৩ জন স্বাধীনতা বিরোধীকে প্রেসিডেন্ট বানানো হয়েছে, মন্ত্রী এমপি বানানো হয়েছে। জামায়াতের কার্ড নিয়ে খেললে শেখ হাসিনার মতো নির্মমভাবে বিদায় নিতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
নির্বাচন প্রসঙ্গে অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনে গণহত্যাকারীদের দৃশ্যমান বিচার ও প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে নির্বাচন নিতে হবে। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করেই নির্বাচন দিতে হবে। অন্যথায় পূর্বের মতো বিতর্কিত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, মাওলানা আব্দুল হালিম প্রমুখ।
নিউজ টুডে বিডি/ন্যাশনাল ডেস্ক