1. Home
  2. জাতীয়
  3. ”আন্দোলন ও নির্বাচন প্রস্তুতি” দ্বৈত নীতিতে জামায়াত
”আন্দোলন ও নির্বাচন প্রস্তুতি” দ্বৈত নীতিতে জামায়াত

”আন্দোলন ও নির্বাচন প্রস্তুতি” দ্বৈত নীতিতে জামায়াত

0
  • 4 days ago,

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী একই সঙ্গে রাজপথে আন্দোলন করছে অন্য দিকে ভোটের প্রস্তুতিও নিচ্ছে। দলটির নেতাকর্মীরা জুলাই সনদের ভিত্তি ও পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনসহ ৫ দফা দাবিতে রাজপথে আন্দোলন করছেন। এর মাধ্যমে জনমত তৈরি এবং ভোটের মাঠে নিজেদের শক্ত অবস্থান নিশ্চিত করাই তাদের অন্যতম লক্ষ্য। এ ধরনের নানা দাবি আদায়ে রাজনীতির মাঠে অন্য দলগুলোকে চাপে রেখে পাশাপাশি তাদের নিজেদের ভোটের প্রস্তুতি সম্পন্ন করতেছে। নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্তে জামায়াত নেতারা অটল। চেষ্টা চালাচ্ছে জোট বেঁধে, বিশেষ করে ইসলামি দলগুলোর সাথে শক্তিশালী একটি জোট গঠন করে ভোট করার।

এজন্য কয়েকটি ইসলামি দলসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সমঝোতারও চেষ্টাও চলছে। কোনো অবস্থাতেই ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হাতছাড়া করতে চাচ্ছেন না জামায়াতের নীতিনির্ধারকরা। এজন্য রাজপথে আন্দোলনের পাশাপাশি সমানতালে নির্বাচনি প্রচারণা চালিয়ে নিতে কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এসব তথ্য।

যদিও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আসন্ন নির্বাচন নিয়ে সতর্ক ভাবে পা ফেলছে জামায়াত। রাজপথে আন্দোলন তাদের নির্বাচনি কৌশলের অংশ। ডাকসু-জাকসুর নির্বাচনে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি সাফল্য পেয়েছে। এ পরিস্থিতিতে দলটি কোনোভাবেই জাতীয় নির্বাচন হাতছাড়া করতে চাইছে না।

জামায়াতের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের অন্তত ৫ জন নেতা জানান, নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে কোনো শঙ্কা নেই তাদের। আসন্ন নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে নেতাকর্মীরা অটল। তারই ভিত্তিতে ৩০০ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। এসব প্রার্র্থী নিজ নিজ এলাকায় প্রচারণায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। গণসংযোগ, মতবিনিময় সভা এবং উন্নয়ন ইস্যু নিয়ে জনগণের কাছে নিজেদের (প্রার্থী) তুলে ধরছেন। জনগণের আস্থা অর্জনে কাজ করছেন। তরুণ ভোটারদের টার্গেট করে অনলাইন ক্যাম্পেইনের প্রস্তুতিও চলছে জোরেশোরে। জামায়াতের আমির ও সেক্রেটারি জেনারেলসহ সবাই নির্বাচনি মাঠে বেশি সময় ব্যয় করছেন। ৫ দফা দাবিতে আন্দোলন করলেও এটা নির্বাচনেরই কৌশলের অংশ।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, আমরা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্যই এতকিছু করছি। আমাদের ইতিহাস কি? আমরা সংসদে ছিলাম। আবার রাজপথে মিছিল করেছি। সেই মিছিল থেকে আবার সংসদে গিয়েছি। এ কারণেই বলছি, রাজপথে আন্দোলন তো থাকবেই। কারণ জনগণ ও দেশের ইস্যু ছাড় দেওয়া যায় না। আমরা বলি সংস্কার চাই, সংস্কারের ভিত্তিতে সব হবে। সংস্কারের জন্য ৩ মাস সময় দিলাম, এটার কোনো লিগ্যালিটি নেই, বাস্তবায়ন নেই, তাহলে কি আমরা তামাশা করলাম? সংস্কার না হলে ইলেকশন কিসের ওপর হবে? পুরোনো আইনে তো নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। রাজপথে আন্দোলন করে দাবি আদায় না হলে নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা সময়ের ওপর নির্ভর করবে। জনগণ যা চাইবে সরকার তো তা-ই করবে। জনগণ না চাইলে কোনো কিছু তো সরকার চাপিয়ে দিতে পারবে না।

জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এবং দলটির কেন্দ্রীয় মিডিয়া ও প্রচার বিভাগের প্রধান অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেন, ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনে হবে এবং এই নির্বাচনের সব প্রস্তুতি আমাদের আছে। রাজপথে আন্দোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা বলেছি জুলাই সনদের ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচন হতে হবে। এর সঙ্গে আমাদের দাবি হচ্ছে পিআর পদ্ধতিতে যেন নির্বাচনটা হয়। এখন তো আমরা ৫ দফা দাবিতে সমাবেশ দিয়েছি। আমরা আশা করছি জুলাই সনদের ভিত্তিতেই নির্বাচন হবে। 

এর আগে ১৫ সেপ্টেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ৫ দফা দাবিতে ৩ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করে দলটি। জামায়াতের দাবি হচ্ছে-জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজন করা; আগামী জাতীয় নির্বাচনে সংসদের উভয়কক্ষে পিআর পদ্ধতি চালু করা; অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা; ফ্যাসিস্ট সরকারের সব জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা এবং স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।

এসব দাবিতে ১৮ সেপ্টেম্বর রাজধানীতে বিক্ষোভ সমাবেশ, ১৯ সেপ্টেম্বর দেশের সব বিভাগীয় শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন দলটির নেতাকর্মীরা। ২৬ সেপ্টেম্বর দেশের সব জেলা বা উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিল করবে জামায়াতে ইসলামী। এসব দাবিসহ আরও কিছু দাবিতে জামায়াতের পাশাপাশি পৃথক একই কর্মসূচি দেয় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত মজলিস, নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন ও জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা)।

নিউজ টুডে বিডি/নিউজ ডেস্ক