
রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকার কয়েকটি দোকান ও গুদামে গতকাল শনিবার সেনাবাহিনী অভিযান চালিয়ে প্রায় ১ হাজার ১০০টি ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করেছে। এসব অস্ত্র বিক্রি ও সরবরাহের সঙ্গে জড়িত ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। উদ্ধার অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে- সামুরাই চাপাতি, চাইনিজ কুড়াল, বাংলা কুড়াল, চাকু ও মিট হ্যামার।
সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ আর্মি ক্যাম্পে গতকাল (৯ আগস্ট) রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সেনাবাহিনীর ৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেডের ডেয়ারিং টাইগার্সের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাজিম।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাজিম বলেন, ‘আমরা খবর পেয়েছি এই আইটেমগুলো (ধারালো অস্ত্র) কোনো একটা জায়গা থেকে সন্ত্রাসীদের কাছে সরবরাহ করা হচ্ছে এবং গোপনে বিক্রি করা হচ্ছে, এমনকি ভাড়াও দেওয়া হচ্ছে। কিছু কিছু সময় ফ্রি ডেলিভারি দেওয়া হচ্ছে, হোম ডেলিভারি দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পেরেছি, ঢাকার কোনো একটি জায়গা থেকে এই আইটেমগুলো সন্ত্রাসীদের হাতে দেওয়া হয়।’
নাজিম আরও বলেন, ‘আমাদের কাছে গ্রেপ্তারকৃত সন্ত্রাসীরা স্বীকার করেছে, একটা স্থান থেকে তারা এই সামুরাইগুলো সাপ্লাই পাচ্ছে। এরপর আমরা আমাদের গোয়েন্দা কার্যক্রম শুরু করি। কয়েক দিন ধরে আমাদের গোয়েন্দারা বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে খোঁজ নেয় এবং নিশ্চিত হয় যে কোন কোন স্থানগুলোতে এই ধারালো অস্ত্রগুলো পাওয়া যাবে। এর ভিত্তিতে আমরা আজ (শনিবার) নিউমার্কেটে গিয়ে তিন থেকে চারটি দোকানে তল্লাশি চালিয়ে এই ধারালো অস্ত্রগুলো উদ্ধার করতে সক্ষম হই।’
সেনাবাহিনীর এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আজ আমরা এই কাজে জড়িত হিসেবে ৯ জনকে গ্রেপ্তার করতে পেরেছি। মোট তিনটি দোকান থেকে মূল এই আইটেমগুলো পাওয়া যায়। আমরা কয়েক মাস ধরে লক্ষ করেছি, সন্ত্রাসীরা এই ধরনের দেশি অস্ত্রই বেশি ব্যবহার করে। গত তিন-চার মাস ধরে এগুলো বিশাল আকারে মজুত করা হয়েছে এবং বিভিন্ন সন্ত্রাসীদের হাতে দেখা যাচ্ছে।’
উদ্ধারকৃত অস্ত্রগুলো গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে। পরবর্তীতে তারা যাচাই-বাছাই শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেবে। পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে অপরাধীদের কোনো যোগসাজশ আছে কিনা, তা নিশ্চিত করতে তদন্ত চলবে।
ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে, এ ধরনের ধারালো অস্ত্র বিক্রি না করতে। বর্তমান পরিস্থিতিতে এসব অস্ত্র সন্ত্রাসীদের হাতে পৌঁছে সাধারণ মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
সাধারণ জনগণকে অনুরোধ করা হয়েছে, কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য রোধে সহায়তা করতে এবং আশপাশে কোনো অবৈধ অস্ত্রের ব্যবসা দেখলে নিকটস্থ ক্যাম্পে খবর দিতে।
নিউজ টুডে বিডি/ নিউজ ডেস্ক